এই ভাইরাসের উৎসস্থল চীনের উহানে লকডাউন তুলে নেওয়ার দিন বুধবার রাতে কোভিড-১৯ মহামারীর যে হালনাগাদ তথ্য জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি দিয়েছে, তাতে এই চিত্র দেখা যায়।
এ দিন পর্যন্ত ১৮৪টি দেশ ও অঞ্চলে নভেল করোনাভাইরাস মোট আক্রান্ত করেছে ১৪ লাখ ৬৪ হাজার ৮৫২ জনকে। এর মধ্যে ইতোমধ্যে সেরে উঠেছেন ৩ লাখ ১৫ হাজার ১০৫ জন।
এই পর্যন্ত মৃত্যু ঘটেছে ৮৫ হাজার ৩৯৭ জনের। আর বাকিরা এখনও চিকিৎসাধীন।
চার মাস আগে সংক্রমণ শুরুর পর আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, সেরে ওঠার সংখ্যা বৃদ্ধির গতি সেই তুলনায় ধীর।
সবচেয়ে বেশি রোগী সেরে উঠেছে চীনে, দেশটিতে আক্রান্ত ৮২ হাজার ৮০৯ জনের মধ্যে ৭৭ হাজার ৫৬৭ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। দেশটিতে মৃত্যু ঘটেছে
চীনের পর সবচেয়ে বেশি রোগী সেরে উঠেছে স্পেনে, দেশটিতে এই পর্যন্ত সেরে উঠেছেন ৪৮ হাজার ২১ জন।
এই মহামারীতে সবচেয়ে বিপর্যয়ে পড়া দেশের একটি হল স্পেন। ইউরোপের দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এক লাখ ৪৬ হাজার জন, আর মৃতের সংখ্যা ১৪ হাজার ৬৮৩ জন, সেটাও বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
চরম বিপর্যস্ত আরেক দেশ ইতালিতে আক্রান্ত হওয়ার পর করোনাভাইরাসমুক্ত হয়েছেন ২৬ হাজার ৪৯১ জন। সেরে ওঠার দিক থেকে তাদের অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম, তার উপরে রয়েছে জার্মানি ও ইরান।
ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৯ হাজার ৪২২ জন, মৃতের সংখ্যা ১৭ হাজার ৬৬৯ জন, যা বিশ্বে এক দেশে সর্বাধিক।
চীন ও স্পেনের পর সবচেয়ে বেশি রোগী সেরে উঠেছে জার্মানিতে। দেশটিতে এই সংখ্যা ৩৬ হাজার ৮১ জন।
যে সব দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখের বেশি, সেসব দেশগুলোর মধ্যে জার্মানিতে মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে কম। দেশটিতে ২ হাজার ৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে কোভিড-১৯ রোগে।
সেরে ওঠার বিচারে জার্মানির পরই রয়েছে ইরান, দেশটিতে ৬৪ হাজার ৫৮৬ জনের মধ্যে সেরে উঠেছেন ২৯ হাজার ৮১২ জন। দেশটিতে মারা গেছেন ৩ হাজার ৯৯৩ জন।
এখন সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত যে দেশটিতে, সেই যুক্তরাষ্ট্রে এই পর্যন্ত ২২ হাজার রোগী সেরে উঠেছেন। মারা গেছেন ১৪ হাজারের বেশি মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়েছে, আর এর দেড় লাখই নিউ ইয়র্ক রাজ্যের বাসিন্দা। অর্থাৎআক্রান্তের সংখ্যায় দেশ হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্পেনের চেয়েও নিউ ইয়র্ক রাজ্যে কোভিড-১৯ রোগী বেশি।
সেরে ওঠা রোগীদের সংখ্যার হিসেবে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। দেশটিতে এই পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার ৭০ জন আক্রান্তের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৯ হাজার ৫২৩ জন।
এর পরের স্থান দুটি সুইজারল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার। সুইজারল্যান্ডে ২৩ হাজার আক্রান্তের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ১০ হাজার ৩৩৪ জন আক্রান্তের মধ্যে সেরে উঠেছেন ৬ হাজার ৭৭৬ জন।
সেরে ওঠা রোগীর সংখ্যা এখনও খুব কম যুক্তরাজ্য । দেশটিতে এই পর্যন্ত ৬১ হাজার ৪১৫ জন আক্রান্তের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৩৩৪ জন।
দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তানে ৪ হাজার ১৯৬ জন আক্রান্তের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪৬৭ জন। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা আটজন বেড়ে হয়েছে ৬০।
ভারতে সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা ৫০৬। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭৪৯, মৃতের সংখ্যা ১৭৮।
বাংলাদেশে মোট ২১৮ জন আক্রান্তের মধ্যে সেরে উঠেছেন ৩৩ জন, মারা গেছেন ২০জন, বাকিরা এখনও চিকিৎসাধীন।
গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম নতুন ধরনের এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। অন্য প্রদেশগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ার পর ভিন্ন দেশেও ভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়।
তখন এই ভাইরাসের নাম দেওয়া হয় নভেল করোনাভাইরাস, আর এর ফলে সৃষ্ট রোগ নাম পায় কভিড-১৯; যার লক্ষণ জ্বর, মাথাব্যথা ও শ্বাসজনিত সমস্যা।
শুরুতে চীনে মৃতের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকলেও মাস দুয়েকের মধ্যে তারা পরিস্থিতি অনেকটাই সামলে নেয়।
চীনের পর ইতালি ও স্পেনে সংক্রমণ ঘটার পর মৃতের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকে। এখন পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।