ট্রাম্পের হুমকির পর হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রপ্তানিতে রাজি ভারত

করোনাভাইরাস ঠেকাতে ওষুধ হিসেবে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সরবরাহ না করলে ভারতকে ফল ভুগতে হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের এমন হুমকির কয়েকঘণ্টা পরই এ ওষুধ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে রাজি হয়েছে ভারত।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 April 2020, 02:26 PM
Updated : 7 April 2020, 02:26 PM

মঙ্গলবার ভারত এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। তবে কতগুলো ওষুধ রপ্তানি করা হবে তা পরিষ্কার জানা যায়নি। পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, “যা মজুদ আছে তাতে ভারতের কোম্পানিগুলো কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী ওষুধটি রপ্তানির প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারবে।”

ভারত সরকার নিজ দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তের চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন যাতে কম না পড়ে সেজন্য এ ওষুধ এবং এর উপাদান রপ্তানিতে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।এরপরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রোববার ফোনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলে তার কাছ থেকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন চান।

সোমবার স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়,ভারত ট্রাম্পের অনুরোধ বিবেচনা করে দেখবে।এদিনই ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান,ওষুধটির ওপর ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত তার পছন্দ হয়নি। এ সময়ই ভারত ওষুধ না দিলে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ট্রাম্প হুমকি দেন।

এরপরই ভারত সরকার সুর বদলাল।মঙ্গলবার ভারতের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে,“করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে মানবতার কথা ভেবে ভারত কেবল করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত দেশগুলোতেই নয় বরং প্রতিবেশী দেশগুলোকেও এই ওষুধ সরবরাহ করবে।”

ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কার্যকর হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কোভিড ১৯-র চিকিৎসায়ও ভালো ফল দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কিছুটা ভাল কাজ দেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ধারণা, এ ওষুধ বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। এ ওষুধটির ওপর মার্কিনিদের নির্ভরশীলতা বাড়ছে।

ট্রাম্প হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনকে ‘গেম-চেঞ্জার’ হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেছিলেন আগেই। যদিও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ওষুধকে ‘গেম চেঞ্জার’ বলা যায় না। ম্যালেরিয়ার এ ওষুধ কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সফল, তা বলার সময় এখনো আসেনি বলেই মত তাদের।

বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত অনেক দেশেই এ ওষুধ নিয়ে গবেষণা চলছে। কোথাও ভাল কাজ দিচ্ছে, আবার কোথাও এ ওষুধ ডেকে আনছে অন্য রোগ। এটি করোনাভাইরাস ঠেকাতে কার্যকর হওয়ার কোনো অকাট্য প্রমাণও এখনো পাওয়া যায়নি।

ভারতের কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) গত মাসে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় স্বাস্থ্যকর্মীদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল।

এরপর ২৫ মার্চ নয়া দিল্লি এই ওষুধ রপ্তানি স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়; যদিও তাতে মানবিক কারণে প্রয়োজনে ওষুধটি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ রাখা ছিল।

ডিসেম্বরের শেষে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে এই মুহুর্তে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্র। এ পরিস্থিতিতে দেশটি যেন খড়কুটোর মতো এই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন আঁকড়ে ধরেই বাঁচতে চাইছে।

গত সপ্তাহে দেশটির খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) এক বিবৃতিতে হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন ৫০ কেজির বেশি ওজনধারী করোনাভাইরাস রোগীদের জন্য রাষ্ট্রীয় মজুদ থেকে জরুরি ভিত্তিতে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সালফেট সরবরাহ করতে বলেছে।