এক বিবৃতিতে এই বিশ্ব সংস্থা বলেছে, কভিড-১৯ মহামারীর বিস্তার রোধে নেওয়া নানা ধরনের পদক্ষেপের কারণে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ শিশু দুর্ব্যবহার, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, শোষণ, সামাজিক বাধার মুখোমুখি হতে পারে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়া ও চলাচলের সীমাবদ্ধতার মতো নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার কারণে শিশুদের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে, যারা তাদের দেখভাল করে তাদের ওপরও একধরনের মানসিক চাপ তৈরি করছে। যার প্রভাবে তারা দায়িত্ব ছেড়ে দিতে পারে বলেও মনে করছে ইউনিসেফ।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সম্প্রতি চীনে নারী ও মেয়েদের ওপর ঘরোয়া সহিংসতার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার উদাহরণ টেনে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন ও বাল্যবিয়ের মতো ঘটনাও বাড়তে পারে।
• যৌন নিপীড়ন ও নিগ্রহ প্রতিরোধ এবং নিরাপদে উদ্বেগের কথা জানানোর বিষয়গুলোসহ কভিড-১৯ এর সঙ্গে সম্পর্কিত শিশু সুরক্ষা, ঝুঁকি বিষয়ক স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও শিশুসেবায় নিয়োজিতদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
• লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ঘটনা প্রকাশ পেলে কীভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে, সে বিষয়ে যারা প্রথম সিদ্ধান্ত নেবেন, তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং সহিংসতার শিকার ভুক্তভোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে হবে।
• শিশুদের জন্য প্রাপ্য সুবিধা ও অন্যান্য সহায়তামূলক সেবার বিষয়ে তথ্য প্রচার বাড়াতে হবে
• কভিড-১৯ কীভাবে শিশু, বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীদের জীবনকে ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে প্রভাবিত করে তা মূল্যায়নের জন্য তাদেরকে সম্পৃক্ত করে তথ্যসমৃদ্ধ কর্মসূচি নেওয়া ও প্রচারের ব্যবস্থা করা।
• শিশুদের মানসিক সহায়তা দিতে এবং যথাযথভাবে আত্ম-যত্নে সম্পৃক্ত করতে শিশুপ্রধান পরিবার ও পালনকারী পরিবারসহ অন্তর্বর্তীকালীন সেবাকেন্দ্র ও পরিবারগুলোকে লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা দিতে হবে।
• যেসব পরিবারের উপার্জনের পথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের আর্থিক ও উপকরণগত সহায়তা দিতে হবে।
• পরিবার থেকে শিশুর বিচ্ছিন্ন হওয়া ঠেকাতে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নেওয়া এবং বাবা-মা, অথবা যত্নকারীর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা মৃত্যুর কারণে পর্যাপ্ত যত্ন থেকে বঞ্চিত শিশুদের জন্য সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।
• রোগ নিয়ন্ত্রণে গৃহীত পদক্ষেপসমূহের মধ্যে সব শিশুকে সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়টিকেই যাতে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
ইউনিসেফের শিশু সুরক্ষা বিষয়ক প্রধান কর্নেলিয়াস উইলিয়ামস বলেন, “এসব পরামর্শ সরকার এবং সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষকে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপের একটি রূপরেখা দেবে। পদক্ষপগুলো এই অনিশ্চিত সময়ে শিশুদের সুরক্ষিত রাখার জন্য গ্রহণ করা যেতে পারে।”