করোনাভাইরাস: যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি চার জনের একজন ‘ঘরবন্দি’

মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের নেওয়া পদক্ষেপের কারণে এই মুহুর্তে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি চার বাসিন্দার একজন ‘ঘরবন্দি’ থাকার নির্দেশনার আওতায় পড়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2020, 08:14 AM
Updated : 22 March 2020, 08:39 AM

কভিড-১৯ এর কারণে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি যা দাঁড়াবে তার পরিমাণ কমিয়ে আনতে ওয়াশিংটন নতুন একটি চুক্তির সন্নিকটে  এবং এ চুক্তির ফলে মার্কিন অর্থনীতিতে রেকর্ড এক ট্রিলিয়ন ডলার সঞ্চারিত হতে পারে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

হু হু করে বাড়তে থাকে ভাইরাসের সংক্রমণ কমিয়ে আনতে ক্যালিফোর্নিয়া, নিউ ইয়র্ক, ইলিনয় ও কানেকটিকাটের পর নিউ জার্সির গভর্নরও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দাদের চলাফেরায় ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন।

যেসব অঙ্গরাজ্যে ‘ঘরে থাকার’ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর জনসংখ্যা প্রায় ৮ কোটি ৪০ লাখ; এ অঙ্গরাজ্যগুলো যুক্তরাষ্ট্রের মোট অর্থনীতির এক তৃতীয়াংশের নিয়ন্ত্রকও।

বিধিনিষেধ দেওয়া হয়নি এমন অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নররাও তাদের বাসিন্দাদের জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।

অন্যান্য অঙ্গরাজ্য বিধিনিষেধ না দিলেও বাসিন্দাদের চলাচল ও অন্যান্য কার্যক্রম কমিয়ে এনেছে। একমাত্র মিসৌরি হাঁটছে ভিন্ন পথে, সেখানকার কর্তৃপক্ষ শিশুসদনগুলোতে আরও বেশি শিশু নেয়ার অনুমতি দিয়েছে।

বাসিন্দাদেরকে করোনাভাইরাসের হুমকিকে ‘আরও বেশি গুরুত্ব’ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গভর্নর জিম জাস্টিস।

রোববার সকাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ২৬ হাজার ৭৪৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া পরিসংখ্যানে দেখা গেছে। মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩৪০ জনে।

ওয়াশিংটনে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে এক ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি সঞ্চার করতে একটি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

করোনাভাইরাসজনিত সংকট ও আর্থিক ক্ষতি মোকাবেলায় সরকার কয়েকশ বিলিয়ন ডলারের যে প্রণোদনা দিয়েছে, তার সঙ্গে এই অর্থ যোগ হবে। সোমবার মার্কিন কংগ্রেস এ প্রস্তাবটি নিয়ে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।

কভিড-১৯ এর কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলো সেপ্টেম্বরের আগ পর্যন্ত কর্মচারীদের ছুটি না দেয়ার শর্তে নগদ ২৯ বিলিয়ন ডলার দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। আইনপ্রণেতারা অবশ্য এতে রাজি না হয়ে ওই অর্থ ধারে দেয়ার প্রস্তাব করেছেন।

ডিসেম্বরের শেষদিকে চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের দুই সদস্যও আক্রান্ত হয়েছেন।

অজ্ঞাত এক উপদেষ্টার শরীরে কভিড-১৯ মেলার পর যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও তার স্ত্রীর দেহেও করোনাভাইরাস উপস্থিতি শনাক্তে পরীক্ষা হয়েছিল; পরীক্ষায় তাদের কারো শরীরেই ভাইরাসটি ধরা পড়েনি।

পেন্সের দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, যে উপদেষ্টার করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে, তার উপসর্গের মাত্রা ছিল মৃদু এবং তিনি পেন্স কিংবা প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শেও আসেননি।

মার্চের শুরুতে হোয়াইট হাউসের পরীক্ষায়ও ট্রাম্পের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি।