করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় জাপানি ফ্লুর ওষুধ কার্যকর: চীন

চীনের মেডিকেল কর্তৃপক্ষ জাপানে নতুন ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি ওষুধের করোনাভাইরাস রোগীর চিকিৎসায় কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে বলে জাপানি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2020, 05:29 PM
Updated : 18 March 2020, 05:37 PM

বুধবার ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ঝাং জিনমিন ‘ফেভিপিরাভির’ নামের ওই ওষুধ উহান ও শেনজেনে ৩৪০ জন রোগীর ওপর প্রয়োগে উৎসাহব্যঞ্জক ফল পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

“এটা খুবই নিরাপদ এবং চিকিৎসায় এর স্পষ্ট কার্যকারিতা রয়েছে,” মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন তিনি।

জাপানের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে বলছে, শেনজেনে যে সব করোনাভাইরাস রোগীকে এই ওষুধ দেওয়া হয়েছে তারা চারদিনের মধ্যে সংক্রমণমুক্ত হয়েছে। অপরদিকে যাদের এ ওষুধ দেওয়া হয়নি তাদের রোগমুক্ত হতে লেগেছে ১১ দিন।

এছাড়া এক্স রে তে এই ওষুধ সেবনকারী রোগীদের মধ্যে ৯১ শতাংশের ফুসফুসের অবস্থার উন্নতি দেখা গেছে, যেখানে অন্যদের ক্ষেত্রে তা হয়েছে ৬২ শতাংশের।  

তবে এই ওষুধের প্রস্তুতকারক ফুজিফিল্ম টোওয়ামা কেমিকেল (২০১৪ সালে নাম ছিল এভিজান) এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে বলে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

চীনা কর্মকর্তা ঝাংয়ের ওই বক্তব্যের পর বুধবার জাপানি এই কোম্পানির শেয়ারের দাম হু হু করে বেড়েছে।

গার্ডিয়ান বলছে, জাপানি চিকিৎসকরাও মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের উপসর্গ দেখা দেওয়া করোনাভাইরাস রোগীর চিকিৎসায় পরীক্ষামূলকভাবে এই ওষুধ ব্যবহার করেন। এতে অন্যান্য জটিলতা তৈরি থেকে রোগীকে রক্ষা করা যাবে বলে আশা করছেন তারা।

তবে এই ওষুধ গুরুতর রোগীর ক্ষেত্রে ততটা কার্যকর নয় বলে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

“আমরা ৭০ থেকে ৮০ জনকে এভিজান দিয়েছি। কিন্তু ভাইরাস সংক্রমণে অন্যান্য জটিলতা তৈরি হওয়া রোগীর ক্ষেত্রে এটা খুব কাজ দিয়েছে বলে মনে হয়নি,” বলেছেন তিনি।

করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এইচআইভি এন্টিরেট্রোভাইরালস লোপিনাভির ও রিটোনাভির মিশ্রণ ব্যবহারেও একই সীমাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

২০১৬ সালে ইবোলা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় গিনিতে জরুরি সহায়তা হিসেবে ‘ফেভিপিরাভির’ ওষুধ পাঠিয়েছিল জাপান।

মূলত ফ্লুর চিকিৎসার জন্য এই ওষুধ প্রস্তুত হওয়ায় তা কভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় পুরোদমে ব্যবহারের জন্য সরকারের অনুমোদন লাগবে।

জাপানের একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেছেন, সব ঠিক থাকলে আগামী মে নাগাদ করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এই ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হতে পারে।

“তবে ক্লিনিক্যাল গবেষণার ফল আসতে দেরি হলে অনুমোদনেও দেরি হবে।”