হুবেই প্রদেশের ১০ লাখ বাসিন্দা অধ্যুষিত কিয়ানজিয়াং শহরটি নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের উৎসস্থল উহান শহর থেকে দেড়শ কিলোমিটার দূরে।
বুধবার পর্যন্ত শহরটির ১৯৭ ব্যক্তির শরীরে প্রাণঘাতী কভিড-১৯ এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
আক্রান্তদের শনাক্ত, তাদের পৃথক রাখা ও চিকিৎসা কার্যক্রম জোরদার করতেই কিয়ানজিয়াং শহর কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের স্বপ্রণোদিত হয়ে তাদের উপসর্গের কথা জানাতে উৎসাহিত করতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
ভাইরাসটির সংক্রমণ মোকাবেলার দায়িত্বে থাকা শহরটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ তাদের নোটিসে জানিয়েছে, স্বপ্রণোদিত হয়ে নিজের দেহে কভিড-১৯ এর উপসর্গের কথা জানানো বাসিন্দাদের মধ্যে যাদের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মিলবে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার ইউয়ান (প্রায় এক হাজার ৪২৬ ডলার) দেয়া হবে।
তবে এ ঘোষণার আগেই যাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে, তারা এ পুরস্কারের আওতায় পড়বেন না।
বাসিন্দাদের কাউকে যদি স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তাৎক্ষণিকভাবেই ‘আক্রান্ত নন’ বলে ঘোষণা না করা হয়, তবে তাকেও এক হাজার ইউয়ান দেয়া হবে বলে জানিয়েছে কিয়ানজিয়াংয়ের টাস্ক ফোর্স। আর যাদেরকে ‘সন্দেহজনক’ বলে ঘোষণা করা হবে, তারা পাবেন দুই হাজার ইউয়ান।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে লোকজনকে উৎসাহিত করতে চীনের আরও বেশ কয়েকটি শহর কর্তৃপক্ষও নাগরিকদের নগদ অর্থ পুরস্কার দেওয়ার নিয়ম চালু করেছে।
উহানের হানইয়াং জেলা ও পার্শ্ববর্তী শহর হুয়াংগুয়াংসহ হুবেই প্রদেশের আরও কিছু এলাকায়ও স্বপ্রণোদিত হয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা বাসিন্দাদের নগদ অর্থ পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। বেশিরভাগ এলাকাতেই পুরস্কারের অর্থের পরিমাণ ৫০০ ইউয়ানের কাছাকাছি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
জিয়াংজি ও হেবেই প্রদেশের বিভিন্ন শহরেও ৩০০-৫০০ ইউয়ানের মধ্যে এ ধরনের পুরস্কার চালু রয়েছে বলে সেখানকার গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
চীন এর আগে ভাইরাসের লক্ষণ ধরা পড়া ব্যক্তিদের বিনা পয়সায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিশ্চয়তা দিয়েছিল। অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণে কেউ যেন স্বাস্থ্য পরীক্ষা থেকে বাদ না যায় তা নিশ্চিতে স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষকে পর্যাপ্ত তহবিল দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বুধবার পর্যন্ত হুবেই প্রদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে; মৃতের সংখ্যা ২৬০০ অতিক্রম করেছে।
ডিসেম্বরের শেষদিকে হুবেইয়ের রাজধানী উহানে সংক্রমণ শনাক্তের পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৮০ হাজার মানুষ নতুন এ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে ; মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৮০০।