জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “হানাও শহরের শিশাবারে বুধবার রাতের হামলার সঙ্গে সম্ভবত উগ্র ডানপন্থি চরমপন্থার যোগসূত্র আছে৷ অন্য জাতিসত্ত্বা, ধর্ম এবং চেহারার প্রতি বিদ্বেষ থেকে কট্টর-ডান চরমপন্থি হামলাকারী বর্ণবাদী উদ্দেশ্যে এ হামলা চালিয়েছে বলে এ মুহূর্তে নানা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷’’
তিনি বলেন, ‘‘বর্ণবাদ একধরনের বিষ৷ ঘৃণা একধরনের বিষ৷ আর এই ঘৃণা আমাদের সমাজে এখনো আছে৷’’ ফেডারেল কৌঁসুলিরা হামলার ঘটনাটিকে সন্ত্রাসী হামলা হিসাবেই দেখছেন।
বুধবার স্থানীয় সময় রাত দশটার দিকে হানাও শহরের একটি শিশাবার এবং পার্শ্ববর্তী ক্যাফেতে প্রবেশ করে গুলিবর্ষণ করে ৪৩ বছর বয়সী এক বন্দুকধারী৷ সেখানে বেশ কয়েকজন হতাহত হন৷
এরপর হামলাকারী ঘটনাস্থল থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে একটি গাড়ি এবং স্পোর্টস বারেও হামলা চালায়৷ সেখানেও হতাহতের ঘটনা ঘটে৷ পরে হামলাকারীসহ তার মা-কে মৃত অবস্থায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার করে পুলিশ৷
হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন তুর্কি নাগরিক বলে জানিয়েছেন জার্মানিতে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত আলী কামাল আয়দিন৷ দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে লিখেছে, “এ হামলা এটিই প্রমাণ করে যে, ইউরোপে বর্ণবাদ এবং ইসলামবিদ্বেষ বাড়ছে।”
স্থানীয় গণমাধ্যমে সন্দেহভাজন হামলাকারীকে জার্মান নাগরিক তোবাইস আর নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিল্ড ট্যাবলয়েড পত্রিকা জানিয়েছে তার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ছিল। তার গাড়িতেও গোলাবারুদ এবং বন্দুকের ম্যাগাজিন পাওয়া গেছে।
হামলাকারী অতীতে আরব এবং মুসলিম দেশগুলো সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছে এবং হামলার আগে একটি ভিডিও বার্তা অনলাইনে পোস্ট করেছে। জার্মান গণমাধ্যম জানিয়েছে, হামলাকারী বুধবারের হামলার দায় স্বীকার করে একটি চিঠিও রেখে গেছে। সেই চিঠি এবং ভিডিও বার্তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
জার্মানিতে কট্টর-ডান সহিংসতা বাড়তে থাকা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটল। এ ঘটনার পর জার্মানির সবচেয়ে বড় চারটি ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশন উগ্র ডানপন্থিদের রুখতে আরো উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে৷
জার্মানিতে গত কয়েকবছরে মসজিদসহ মুসলিমদের ওপর হামলার বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে৷ দেশটি ২০১৫ সালে ১০ লাখের বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার পর এ ধরনের হামলা বেড়েছে৷