নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার পর প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের প্রায় ৫০০ আরোহী জাহাজ থেকে তীরে নামা শুরু করেছেন।
Published : 19 Feb 2020, 12:29 PM
ডায়মন্ড প্রিন্সেসের আরোহীদের মধ্যে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পর ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে জাহাজাটিকে পৃথক করে পর্যবেক্ষণে (কোয়ারেন্টিন) রাখা হয়েছিল।
বুধবার প্রমোদতরীটির পরিচালনা কর্তৃপক্ষ ও জাপানি কর্মকর্তারা ‘অল ক্লিয়ার’ ছাড়পত্র পাওয়া যাত্রীদের জাহাজ ছেড়ে নেমে আসার অনুমতি দেয়, জানিয়েছে বিবিসি।
জাহাজটির প্রায় ৫০০ আরোহী, যাদের শরীরে ভাইরাসটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি এবং অসুস্থতার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি, তাদের জাহাজ থেকে নামার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার থেকে তারা নামতে শুরু করেছেন এবং আসছে দিনগুলোতে আরও অনেক নেমে আসবেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।
এ দিন যে যাত্রীরা প্রথম ডায়মন্ড প্রিন্সেস থেকে নেমে আসেন তারা দ্রুততার সঙ্গে অপেক্ষমাণ বাসে ও ট্যাক্সিতে উঠে যান বলে বিবিসির প্রতিনিধি লরা বিকার জানিয়েছেন।
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ডায়মন্ড প্রিন্সেস থেকে হংকংয়ে নেমে যাওয়া ৮০ বছর বয়সী এক যাত্রী করোনাভাইসরাটিতে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রমোদতরীটিকে ইয়োকোহামা বন্দরে পৃথক অবস্থায় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তারপর থেকে জাহাজটির প্রায় তিন হাজার ৭০০ যাত্রীর মধ্যে অন্তত ৫৪২ জন ভাইরাসটির সংক্রমণে আক্রান্ত হন। সংখ্যার দিক থেকে চীনের মূলভূখণ্ডের বাইরে এই জাহাজটিতেই সবচেয়ে বেশি লোক নতুন করোনাভাইরাসজনিত রোগ কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হন।
জাহাজটির আরও কিছু যাত্রীর শরীরে ভাইসরাটির অস্তিত্ব পাওয়া না গেলেও তারা আক্রান্তদের সঙ্গে একই কেবিনে থাকায় তাদের আরও কিছুদিন কোয়ারেন্টিন রাখা হবে।
ডায়মন্ড প্রিন্সেস যাত্রী হয়েছিল বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশের লোক। এই জাহাজটি বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ ছড়ানোর উৎস হয়ে উঠতে পারে এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।
জাহাজে কোয়ারেন্টিন অবস্থার কঠিন পরিস্থিতির বর্ণণার দিয়েছেন যাত্রীরা। প্রথমে তাদের নিজ নিজ কেবিনে পৃথক অবস্থায় থাকতে হয়, পরে তাদের জাহাজের ডেকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা বলবৎ থাকার পরও দিন দিনে জাহাজটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তেই থাকে। এক পর্যায়ে কয়েকটি দেশ ও অঞ্চল পৃথকভাবে জাহাজটি থেকে তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া শুরু করে।
গত বছরের শেষ দিন থেকে চীনের উহানে নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা ২০১০ জনে দাঁড়িয়েছে আর আক্রান্তের সংখ্যা ৭৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
নতুন করোনভাইরাসে আক্রান্তদের রোগটিকে কভিড-১৯ বলে নামকরণ করা হয়েছে।