ভাইরাস তার শরীর থেকে পরিবারের সদস্য এবং পরে তা শ্রীকালাহস্তি শহরের বাসিন্দাদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়বে ভেবে চিতোর জেলার ৫০ বছর বয়সী বালাকৃষ্ণান আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন।
তিরুপতি রুইয়া হাসপাতালের চিকিৎসকরা ঠাণ্ডা লাগার উপসর্গ দেখে তাকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিলে বালাকৃষ্ণান নিজেকে নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন; এক পর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের ঘরের ভেতর আটকে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে ছেলে বালামুরালির বরাত দিয়ে জানিয়েছে এনডিটিভি।
“হৃদরোগের চেকআপের জন্য তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। চিকিৎসকরা তাকে মাস্ক ব্যবহার করতে বললে তিনি ভুল বোঝেন, ধারণা করেন তিনি বোধহয় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। (বাড়ি আসার পর) তিনি কাউকে তার কাছে ঘেঁষতে দিচ্ছিলেন না। আমি বলেছি, আপনি সংক্রমিত হননি, তবুও তিনি শোনেননি।
“ইন্টারনেটে রোগের লক্ষণ সংক্রান্ত অসংখ্য ভিডিও দেখে তিনি সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, ভাইরাসটির সব লক্ষণই তার আছে। সোমবার তিনি আমাদের ঘরের ভেতর আটকে রেখে তালা বন্ধ করে দেন; এরপর যতক্ষণে আমরা তার কাছে পৌঁছেছি, ততক্ষণে তিনি গাছে ফাঁস নিয়েছেন,” বলেছেন বালামুরালি।
গত কয়েক সপ্তাহে ভারতের কেরালায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিন ব্যক্তির সন্ধান মিললেও, অন্ধ্র প্রদেশের কারও দেহে সংক্রমণের খবর মেলেনি।
কেরালার আক্রান্ত তিন শিক্ষার্থীই গত মাসে চীনের উহান থেকে ভারতে ফিরেছিলেন।
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে হুবেই প্রদেশের এ রাজধানী শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাসটি এরই মধ্যে ২৫টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১১৫ জনে; আক্রান্ত ছাড়িয়ে গেছে ৪৫ হাজার।
ভাইরাসটিতে আক্রান্তদের মধ্যে প্রথম দিকে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টের মতো সাধারণ কিছু উপসর্গ দেখা যায়। তীব্রতর সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীরা নিউমোনিয়া, সিভিয়ার অ্যাকুট রেসপারেটরি সিনড্রোম, কিডনি বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন; অনেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
চীনের বাইরে এখন পর্যন্ত মাত্র দুইজনের মৃত্যুর খবর মিললেও ভাইরাসটির দ্রুত সংক্রমণ প্রবণতার কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন এ করোনাভাইরাসটিকে নিয়ে ‘বৈশ্বিক সতর্কতা’ জারি করেছে।