হারেকালা হাজাব্বা: পদ্ম শ্রী জেতা কর্নাটকের কমলা বিক্রেতা

ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্ম শ্রী পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, হারেকালা হাজাব্বা এ খবরটি যখন জানলেন তখন তিনি রেশন দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2020, 10:02 AM
Updated : 28 Jan 2020, 10:04 AM

এক টুইটে এমনটিই জানিয়েছেন ভারতের বন বিভাগের কর্মকর্তা পারভীন কাসওয়ান, এক প্রতিবেদনে বলেছে এনডিটিভি।

৬৮ বছর বয়সী হারেকালা পেশায় একজন কমলা বিক্রেতা। কমলা বিক্রির স্বল্প আয় দিয়েই তিনি কর্নাটকের নিজ গ্রাম নিউপাদাপুতে একটি অস্থায়ী বিদ্যালয় স্থাপন করেন। ২০০০ সালে এই বিদ্যালয় স্থাপনের আগে নিউপাদাপুতে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই ছিল না বলে জানিয়েছে বিবিসি।

শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় এক পর্যায়ে স্কুলের জন্য জমি কিনতে নিজের সঞ্চয়ের পাশাপাশি ঋণও নিয়েছিলেন স্বল্প আয়ের এই মানুষটি।

“কর্তৃপক্ষ যখন তাকে তার পদ্ম শ্রী পুরস্কার পাওয়ার কথা জানাচ্ছে, তখনও হারেকালা হাজাব্বা রেশনের লাইনে দাঁড়িয়ে। দক্ষিণ কন্নডের এ ফল বিক্রেতা গত এক দশক ধরে তার গ্রাম নিউপাদাপুর একটি মসজিদে দরিদ্র শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করে আসছেন। সবই তিনি করেছেন নিজের সঞ্চয় দিয়ে,” রোববার পোস্ট করা টুইটে বলেন পারভীন কাসওয়ান।

পারভীনের এই টুইটে ইতোমধ্যে প্রায় সাত হাজার ‘লাইক’পড়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

কখনো স্কুলের চৌকাঠ না মাড়ানো হারেকালা দ্য নিউজ মিনিটকে জানান, বিদেশি এক দম্পতির কাছে ফল বিক্রি করতে ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি তার গ্রামে স্কুল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন।

“ওই দম্পতি আমার কাছে কমলার দাম জিজ্ঞেস করেছিল, তখন আমি তা বুঝতে পারিনি। অনেক চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু আমি টুলু ও বিয়ারি ভাষা ছাড়া কিছুই বলতে পারতাম না। তখন ওই দম্পতি চলে যান।

“আমার খুব খারাপ লেগেছিল; আমার গ্রামের শিশুদের যেন কোনোদিন এমন পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, তাই ভেবেছিলাম। আমি বুঝতে পেরেছিলাম, যোগাযোগ কীভাবে একজনকে জীবনে এগিয়ে যেতে এবং মানুষকে কাছাকাছি আনতে সাহায্য করে,” দ্য নিউজ মিনিটকে এমনটাই বলেছিলেন হাজাব্বা।

হারেকালা হাজাব্বার জীবনের এ গল্প টুইটার ব্যবহারকারীদের মন জয় করে নিয়েছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।

“তিনি সত্যিকারের একজন অনুপ্রেরণাদায়ী, প্রকৃত নায়ক এবং এ পুরস্কারের উপযুক্ত ব্যক্তি,” বলেছেন পারভীন কাসওয়ানের টুইটে মন্তব্য করা এক ব্যবহারকারী।

হারেকালা হাজাব্বাকে তার এলাকার লোকজন আবেগভরে ‘অক্ষর সন্ত’ নামে ডাকে। পদ্ম শ্রী পাওয়ার পর এখন ‘অক্ষর সন্তের’ আশা, সরকার এবার তার গ্রামে একটি কলেজ করে দেবে।