পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত ইরানের

ইরান ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়াকে একটি বিকল্প হিসাবে হাতে রেখেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে।

>>রয়টার্স
Published : 22 Jan 2020, 03:10 PM
Updated : 22 Jan 2020, 03:21 PM

বুধবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির চিফ অব স্টাফ মাহমুদ ভায়েজি এ ইঙ্গিত দেন বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা আইআরএনএ।

ভায়েজি বলেন,“কেউ ইরানকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে নিয়ে যেতে পারে বলে আলোচনা হয়েছিল… সেটি যদি হয় তাহলে আমরা চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কঠিন সিদ্ধান্ত নেব।”

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এমন সম্ভাবনার কথা ইউরোপের শক্তিধর দেশগুলোকে এর আগেই চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন বলে জানান ভায়েজি।

ইউরোপীয় দেশগুলো ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে ইরানকে জাতিসংঘে নিয়ে গেলে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি গত সোমবার দিয়েছিলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফ।

ইরানের বার্তা সংস্থাগুলোতে তিনি বলেছিলেন,“ ইউরোপীয়রা যথাযথ আচরণ না করলে এবং ইরানের ফাইল নিরাপত্তা পরিষদে নিয়ে গেলে আমরা এনপিটি থেকে বেরিয়ে যাব।”

স্নায়ুযুদ্ধকালের পর বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের ভিতই হচ্ছে এনপিটি চুক্তি। এর আওতাতেই ইরান ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে পরমাণু চুক্তি সই করেছিল। সেই চুক্তির বদৌলতে পামাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি কমানোর বিনিময়ে ইরান বিশ্ব বাণিজ্যে প্রবেশের সুযোগ পায়।

ইরান এখন এনপিটি থেকে বেরিয়ে আসার হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি আরেক বিকল্প হিসাবে ২০১৫ সালের ওই চুক্তি থেকেও বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দিল।

ইরান এ কাজ করলে তা ‘খুবই নেতিবাচক বার্তা’ দেওয়া হবে বলে ইরানকে মঙ্গলবারেই সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত। যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে এসে ইরানের ওপর পুরোনো সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করাসহ নতুন নতুন আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপরই ইরান ধীরে ধীরে ২০১৫ সালের ওই চুক্তি থেকে সরে আসতে শুরু করেছে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধের প্রেক্ষাপটে ইরান চুক্তিতে উল্লিখিত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সীমা আর না মানার ঘোষণা দেওয়ার পর গত সপ্তাহে জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য ইরান চুক্তি লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেছে এবং বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রক্রিয়ায় ইরানকে আবার নিরাপত্তা পরিষদে নিয়ে যাওয়া হতে পারে এবং দেশটি শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে পারে।