চীনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১৭, বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ

চীনে নতুন নিউমোনিয়া সদৃশ করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭০ ছাড়িয়ে গেছে।উহানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৭।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2020, 05:42 AM
Updated : 22 Jan 2020, 04:48 PM

বুধবার চীনের রাষ্ট্রীয় টিভি প্রাদেশিক সরকারের উদ্ধৃতি দিয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ার এ খবর জানায়। এতে বিশ্বজুড়ে ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে চরম উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

গত বছরের শেষ দিকে চীনে হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে ভাইরাসটির উদ্ভব হওয়ার পর বেইজিং এবং বৃহত্তম শহর সাংহাই থেকে শুরু করে বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এখন বিশ্বজুড়ে তা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

চীনের বাইরে থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, ম্যাকাউ এবং হংকংয়ে ভাইরাসটির বিস্তার ঘটেছে। এছাড়া, মঙ্গলবার নতুন এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে সুদূর যুক্তরাষ্ট্রেও। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার কথা ভাবছে।

থাইল্যান্ডে আক্রান্ত হয়েছে চারজন। আর যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানে ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে একজন করে।

চীনের হুবেই প্রদেশে জনসমাবেশ নিরুৎসাহিত করা ও হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কঠোর করার মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে কর্তৃপক্ষ এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।

চীনের স্বাস্থ্য কমিশন দেশজুড়ে নাগরিকদের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে ও হুবেই প্রদেশের কর্তৃপক্ষকে ছুটির দিনগুলোতে জনসমাবেশ কমানোর নির্দেশ দিয়েছে।

আক্রান্তদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা আরও দুই হাজার ১৯৭ জনকে শনাক্ত করার কথা নিশ্চিত করে ভাইরাসটি ‘হাঁচি, কাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে’ বলে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান লি বিন জানিয়েছেন।

চীনা নববর্ষের ছুটি উপলক্ষে দেশটির কোটি কোটি নাগরিক দেশের ভিতরে ও বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তুতি নেওয়ায়  ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া নিয়ে ঝুঁকি ও উদ্বেগ বাড়ছে। শুক্রবার থেকে চীনে নববর্ষের ছুটি শুরু হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে জনগণের উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আক্রন্তের সংখ্যার প্রতিদিনের হালনাগাদ দিচ্ছে চীনের সরকার।

এ পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বুধবার জরুরি বৈঠক করছে। নতুন করোনাভাইরাসের এ প্রাদুর্ভাবে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হবে কি না তা এ বৈঠকে পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মঙ্গলবারই সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছিল, আগামী দিনগুলোতে নতুন করোনাভাইরাসটি চীনের অপরাপর অংশে ও অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। চীন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান লি ।

চীনে অনেকেই এখন বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ বাতিল করে, ফেস মাস্ক পরে, জনসমাগম এলাকা, সিনেমা হল কিংবা শপিং মলের মতো জনসমাগম এলাকা এড়িয়ে ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা করছে। এ ভাইরাস সংক্রমণে জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট হতে পারে যা থেকে নিউমোনিয়ার মত গুরুতর রোগে মৃত্যুর কারণ হতে পারে। ভাইরাসটির কোনো টিকা নেই।

চীন এ সপ্তাহের প্রথমদিকে ভাইরাসটির মানুষ থেকে মানুষে ছড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ভাইরাসটি ২০১৯-এনসিওভি নামেও পরিচিত। নতুন ধরনের এ করোনাভাইরাসটি মানুষের দেহে এর আগে দেখা যায়নি। ২০০০ সালের শুরুর দিকে সার্স ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী ৮শ’ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী ভাইরাসওটিও ছিল একটি করোনাভাইরাস।