ইরান-ইরাকের আকাশে মার্কিন যাত্রীবাহী বিমানে নিষেধাজ্ঞা

ইরাক, ইরান, ওমান উপসাগর এবং ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যবর্তী জলসীমার ওপরের আকাশপথে মার্কিন যাত্রীবাহী এয়ারলাইন্সগুলোর উড়োজাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (এফএএ)।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Jan 2020, 09:00 AM
Updated : 8 Jan 2020, 09:00 AM

ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এফএএ।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, অন্যান্য দেশের বেশকিছু বিমান পরিবহন সংস্থাও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাপূর্ণ এলাকাগুলোর আকাশসীমা এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ইরান তাদের ভূখণ্ড থেকে ইরাকের অন্তত দুটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ডজনের বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে মঙ্গলবার মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।

ওই হামলার পরপরই এক বিবৃতিতে বলেছে, “মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক কর্মকাণ্ড এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে, যা মার্কিন বেসামরিক বিমান পরিবহনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

এফএএ-র এ নিষেধাজ্ঞার সময়ও বেশ কয়েকটি বিমান ইরাক ও ইরানের আকাশসীমায় ছিল বলে ফ্লাইট রাডার টোয়েন্টিফোরের তথ্যে দেখা গেছে।

মার্কিন এয়ারলাইন্সের বিমান না হওয়ায় সেগুলো সরাসরি এফএএ-র নিষেধাজ্ঞার আওতায় না পড়লেও অন্যান্য দেশের বিমান পরিবহন সংস্থা ও তাদের উড়োজাহাজগুলো সাধারণত উড্ডয়নের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সতর্কতা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে, জানিয়েছে রয়টার্স।

গত বছর জুনে ইরান পারস্য উপরসাগরীয় এলাকায় মার্কিন একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছিল। ওই ঘটনার পরও এফএএ মার্কিন ক্যারিয়ারগুলোকে ইরাকের আকাশসীমায় ২৬ হাজার ফুটের নিচ দিয়ে এবং উপসাগর ও ওমান উপসাগরের ওপর ইরানি আকাশসীমা ব্যবহার করতে নিষেধ করেছিল।

কোরিয়ান এয়ারলাইন্স ও থাই এয়ারওয়েজ জানিয়েছে তারা মার্কিন বাহিনীর ওপর ইরানের হামলার আগে থেকেই ইরাক ও ইরানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলছিল।

ট্রান্সপোর্ট কানাডা জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে তারা এফএএ-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে; এয়ার কানাডার ফ্লাইটগুলোও ঘুরপথে গন্তব্যে যাচ্ছে।

ভারতের বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ এখনও এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা জারি না করলেও এ বিষয়ে বৈঠক করেছে এবং সবাইকে সতর্ক থাকতে ও সাবধানতা অবলম্বনে পরামর্শ দিয়েছে বলে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

ইরাকে হামলার পর সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স তাদের সব ফ্লাইটগুলোকে ইরানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলতে বলেছে।

মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, তারা ইরাকের আকাশসীমা ব্যবহার করে না; তেহরানের হামলার পর থেকে ইরানের আকাশসীমা ব্যবহার না করে অন্য পথ দিয়ে যেতে বিমানগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে।

তাইওয়ানের চায়না এয়ারলাইন্স বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে তারা অনেকদিন ধরেই ইরান ও ইরাকের আকাশসীমা ব্যবহার করছে না।

বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোকে নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে পরামর্শ দেওয়া প্রতিষ্ঠান ওপসগ্রুপ যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে ওই অঞ্চলে পানির ওপর থাকা আকাশসীমার প্রায় পুরোটাই আর ব্যবহারের উপযোগী থাকলো না, বলছে তারা।

“দুবাইয়ের মতো প্রধান প্রধান বিমানবন্দরগুলো থেকে বা সেগুলোর পথে থাকা বিমানগুলোকে এখন সৌদি আরবের আকাশসীমা ব্যবহার করতে হবে,” ওয়েবসাইটে জানিয়েছে ওপসগ্রুপ।