তেহরানে সোলেমানির জানাজায় বিপুল উপস্থিতি

ইরানের নিহত সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেমানির নামাজে জানাজা উপলক্ষে রাজধানী তেহরানের সড়কগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছিল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Jan 2020, 10:34 AM
Updated : 6 Jan 2020, 10:43 AM

প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে শুক্রবার ভোরে বাগদাদে ড্রোন হামলা চালিয়ে সোলেমানিকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী।

রোববার সোলেমানির মৃতদেহ ইরাক থেকে ইরানে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার ইরানের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের জুমার নামাজ চত্বরে তার জানাজা হয় বলে জানিয়েছে ইরানি গণমাধ্যম। এখানে সোলেমানিসহ তার সঙ্গে নিহত সবার জানাজা হয়।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি জানাজায় ইমামতি করেন, এর এক পর্যায়ে তাকে কাঁদতে দেখা গেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

জানাজায় যোগ দিতে তেহরানে ব্যাপক লোক সমাগম হয়েছিল। তাদের অনেককেই কাঁদতে দেখা গেছে।কেউ কেউ নিহত কমান্ডারের ছবি নিয়ে জানাজায় যোগ দিতে এসেছিলেন।

গত শতকের ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় থেকে যুদ্ধের ময়দানে থাকা সোলেমানিকে জাতীয় বীর হিসেবে দেখে ইরানিরা। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা খামেনির পর তিনিই ইরানের সবচেয়ে ক্ষমতাবান লোক ছিলেন বলে ধারণা করা হয়। 

শোকার্ত লোকজন তাদের মাথার ওপর দিয়ে সোলেমানির কফিন এগিয়ে দেওয়ার সময় ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, ‘ইসরায়েল নিপাত যাক’ বলে শ্লোগান দেয়।

জানাজার পর সোলেমানির কন্যা জয়নব সোলেমানি এক ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দেশটিকে ‘অন্ধকার দিনের’ মুখোমুখি হতে হবে।

তিনি বলেন, “উন্মাদ ট্রাম্প তুমি ভেবো না আমার বাবার শাহাদাতেই সব শেষ হয়ে গেছে।”

তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জানাজা শেষে সোলেমানিসহ নিহত সবার কফিন তেহরানের ইনকিলাব চত্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। এখান থেকে কফিনগুলো ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে আজাদি স্কয়ারে নিয়ে যাওয়া হবে বলে পার্স টুডে জানিয়েছে। 

সেখান থেকে সোলেমানির মরদেহ শিয়াপন্থি ইসলামের অন্যতম কেন্দ্রস্থল কোম নগরীতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে তার মরদেহ মঙ্গলবার জন্মস্থান কেরমান প্রদেশে নেওয়া হবে এবং তার অন্তিম ইচ্ছানুযায়ী সেখানেই তাকে দাফন করা হবে।

তেহরানে সোলেমানির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, “আমেরিকানরা সত্যিই বুঝতে পারছে না কী মারাত্মক ভুল তারা করেছে। এই অঞ্চল থেকে আমেরিকার নোংরা হাতগুলো যখন চিরদিনের জন্য বিচ্ছিন্ন করা হবে সে দিনই তার রক্তের বদলা নেওয়া সম্পূর্ণ হবে।” 

মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইরানের সামরিক অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির অভিজাত কুদস বাহিনীর প্রধান ৬২ বছর বয়সী মেজর জেনারেল সোলেমানি। 

তার হত্যার ‘চরম প্রতিশোধ’ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান। এর প্রতিক্রিয়ায় রোববার তারা ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে।

সোলেমানি ইরাক ও অন্যান্য অঞ্চলে মার্কিন কূটনীতিক ও সামরিক সদস্যদের ওপর ‘আসন্ন’ হামলার ছক কষছিলেন বলে দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।