সোলেমানি হত্যা নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে বিভক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের কুদস ফোর্সের শীর্ষ কমান্ডার কাসেম সোলেমানি নিহতের ঘটনা নিয়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেসে। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট শিবির একে অপরের বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।

>>রয়টার্স
Published : 3 Jan 2020, 04:52 PM
Updated : 3 Jan 2020, 05:15 PM

রিপাবলিকানরা প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসায় হয়েছে পঞ্চমুখ। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটরা সোলেমানির ওপর হামলার বৈধতা এবং এর পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

শুক্রবার ভোরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরাকের বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে ড্রোন হামলায় নিহত হন ইরানের প্রভাবশালী কমান্ডার সোলেমানিসহ সাতজন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদরদপ্তর পেন্টাগনের দাবি, “ইরাক এবং ওই অঞ্চলে আমেরিকান কূটনীতিক এবং মার্কিন বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা ছক কষছিলেন সোলেমানি। তাছাড়া, সোলেমানির কুদস ফোর্স শত শত মার্কিন সেনা এবং কোয়ালিশন বাহিনীর সদস্য হতাহতের ঘটনার জন্যও দায়ী।”

ফলে পেণ্টাগনের কথায়, সোলেমানিকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের ভবিষ্যৎ হামলা থেকে বাঁচানো আর  এর মধ্য দিয়ে তেহরানের ওপরও অনেক বেশি চাপ সৃষ্টি করতে পেরেছে মার্কিন প্রশাসন।

সাউথ ক্যারোলাইনার রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম ইরানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ‘ট্রাম্প সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন’ বলে এক টুইটে এর প্রশংসা করেছেন।

আরো কয়েকজন ‍রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশংসা করে বলেছেন, তিনি বহু আমেরিকান সেনার পরিবারের প্রতি ন্যায়বিচার করেছেন।

“সোলেমানির মৃত্যুতে ইরাক এখন ইরানের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিজেরাই নির্ধারণ করার সুযোগ পাবে” বলে মন্তব্য করেছেন রিপাবলিকান সিনেটর  জিম রিখ।

আরেকজন রিপাবলিকান সোলেমানিকে যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু আখ্যা দিয়ে তার হাত আমেরিকানদের রক্তে রঞ্জিত বলে মন্তব্য করেছেন।

ওদিকে, মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে কথা না বলেই বিমান হামলা চালানো হয়েছে।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আমেরিকার নেতারা সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেন মার্কিন নাগরিক এবং দেশের স্বার্থকে। কিন্তু তাই বলে আমরা অযাচিত এবং উস্কানিমূলক কর্মকান্ড করে মার্কিন সেনা সদস্য, কূটনীতিকসহ অন্যান্যদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না।”

“আজকের এ বিমান হামলায় সহিংসতা বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।” মার্কিন হামলার পরিণতি কী হবে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বেশির ভাগ ডেমোক্র্যাট।

নিউ মেক্সিকোর সিনেটর টম উডাল বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কংগ্রেসের তোয়াক্কা না করেই আমাদের দেশকে অযাচিতভাবে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান মোতাবেক এ ব্যাপারে কংগ্রেসের অনুমোদন নেওয়া জরুরি ছিল।”

“বেপরোয়া এ কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী এবং নাগরিকদেরকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন এবং দেশকে মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি বিপর্যয়কর যুদ্ধে নিমজ্জিত করছেন, যা আমেরিকার জনগণ চায় না এবং সমর্থনও করে না।”