লিবিয়ায় সৈন্য পাঠাতে সায় তুর্কি পার্লামেন্টের

লিবিয়ায় আঙ্কারা সমর্থিত সরকারের হয়ে লড়তে দেশটিতে সৈন্য পাঠানোর একটি বিলে সায় দিয়েছে তুরস্কের পার্লামেন্ট।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Jan 2020, 04:56 AM
Updated : 3 Jan 2020, 04:56 AM

বৃহস্পতিবার বিলটি ৩১৫-১৮৪ ভোটে গৃহীত হয় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

পার্লামেন্ট সায় দেয়ায় তুরস্ক এখন ত্রিপোলির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা ফয়েজ আল-সিরাজের গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকর্ডের (জিএনএ) সমর্থনে সেনা পাঠাতে পারবে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ান গত সপ্তাহে বলেছিলেন, পার্লামেন্টের অনুমোদন পেলে আঙ্কারা জানুয়ারিতেই লিবিয়ায় সৈন্য ও সরঞ্জাম পাঠাবে।

রাশিয়া, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্ডান সমর্থিত খলিফা হাফতারের বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে নাকাল জিএনএ গত মাসে তুরস্ককে সেনা পাঠাতে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানায়।

ফয়েজ আল সিরাজের সরকারের প্রতি তুরস্কের পাশাপাশি তিউনিসিয়ারও সমর্থন রয়েছে।

ত্রিপোলির আশপাশে জিএনএ ও হাফতারের বাহিনীর সংঘর্ষ অব্যাহত আছে। বৃহস্পতিবার ত্রিপোলির কেন্দ্রস্থলে হাজারখানের শরণার্থীর একটি অস্থায়ী ক্যাম্পের কাছে তিনটি মর্টার পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা।

নভেম্বরে লিবিয়ার জিএনএ সরকারের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা ও ভূমধ্যসাগরের সমুদ্রসীমা নিয়ে দুটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি করেছিল আঙ্কারা। সমুদ্রসীমার ওই চুক্তি গ্রিস, ইসরায়েল, মিশর ও সাইপ্রাসকে ক্ষুব্ধ করেছে বলেও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার তুর্কি পার্লামেন্টে লিবিয়ায় সেনা পাঠানোর বিল অনুমোদিত হওয়ার পরপরই মিশর এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। আঙ্কারার আগ্রাসী পদক্ষেপ থামাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসারও আহ্বান করেছে তারা।

তুরস্কের পার্লামেন্টে বেশিরভাগ বিরোধী সাংসদরাই বিলটির বিরোধিতা করেছেন। তাদের মতে, লিবিয়ায় সৈন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত তুরস্কের জাতীয় নিরাপত্তা ও সেনাদের প্রাণকে বিপন্ন করবে।

অন্যদিকে এরদোয়ানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলছেন, উত্তর আফ্রিকা ও ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের স্বার্থ রক্ষায় এবং লিবিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে সেখানে জিএনএ সরকারের সমর্থনে সেনা পাঠানো খুবই প্রয়োজনীয়।

জিএনএ-র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফাতি বাশাঘা বলেছেন, হাফতারের বাহিনীর ‘বিপদজনক অগ্রযাত্রা’ রুখতেই তারা তুরস্ককে সেনা পাঠাতে অনুরোধ করেছেন।

অন্যদিকে রাশিয়ার সাংসদ দিমিত্রি নভিকভ বলছেন, লিবিয়ায় তুরস্কের সৈন্য উপস্থিতি সেখানকার পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করবে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে লিবিয়া নিয়ে এ মাসের শেষদিকে এরদোয়ানের আলোচনা হওয়ারও কথা রয়েছে।

আঙ্কারা সেনা পাঠানোর প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেও এখনি ত্রিপোলিতে তুর্কি সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা কম দেখছেন অনেক পর্যবেক্ষকই। এর বদলে সিরিয়ার ইদলিবে থাকা তুর্কি সমর্থিত বিদ্রোহীদেরই ত্রিপোলিতে পাঠানো হতে পারে বলেই ধারণা তাদের।

বিদ্রোহীদের একটি অংশ এরই মধ্যে লিবিয়ায় পৌঁছেছে বলেও অনুমান করা হচ্ছে।