সিএএ’র  সমর্থনে এবার স্যোশাল মিডিয়া প্রচারে মোদী

ভারতে নতুন নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জেরে প্রথম দিল্লির রামলীলা ময়দানে মুখ খুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপরও সিএএ এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) নিয়ে ধোঁয়াশা না কাটায় এবার স্যোশাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে ফের মাঠে নেমেছেন তিনি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2019, 11:15 AM
Updated : 30 Dec 2019, 11:15 AM

সাধারণ মানুষকে এ আইন সমর্থনের আহ্বান মোদী জানিয়েছেন টুইটারে।এর আগে তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) স্যোশাল মিডিয়ায় প্রচার চালিয়ে নতুন আইনকে ঘিরে বিভ্রান্তি দূর করার চেষ্টা চালায় বলে জানিয়েছে ‘দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া’।

আর সোমবার খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদী এক টুইটে ‘#ইন্ডিয়াসাপোর্টসিএএ’ দিয়ে এ আইন সমর্থনের আবেদন জানিয়ে লিখেছেন, ‘‘এ আইন সমর্থন করুন, কারণ এটি নিপীড়িত শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন, কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়।’’ তাছাড়া, অ্যাপে গিয়ে সিএএ সংক্রান্ত ভিডিও, খবর ও অন্যান্য সব কিছু কী ভাবে জানা যাবে, তাও জানিয়ে দিয়েছেন টুইটে।

নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ২০১৫ সালের আগে ভারতে আসা হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, পার্সি ও জৈন শরণার্থীরা ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। সমালোচকদের আশঙ্কা, এ আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) প্রয়োগের ক্ষেত্রে উপযুক্ত নথি না থাকা মুসলিমদেরকে ভারত থেকে তাড়ানোর চেষ্টা চলতে পারে।

সিএএ’র পক্ষে ভারত সরকারের যুক্তি হচ্ছে, আইনটিতে উল্লিখিত তিনটি দেশ মুসলিম প্রধান হওয়ায় সেখানে অন্যান্য সংখ্যালঘুরা নিপীড়িত। তাই তাদেরকে এ আইনে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, আইনটি সাংবিধানিকও। কারণ, এ আইনে নিপীড়িতদেরকে ভারতীয় নাগরিক নয় বরং শরণার্থী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।”

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ‘কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস (সিআরএস)’-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে ভারতের ২০ কোটি মুসলিম নাগরিকের সার্বিক অবস্থার উপর সিএএ এবং এনআরসি প্রভাব ফেলবে বলে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে।

১৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত সিআরএস এর দুই পাতার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,“নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে (সিএএ) তিনটি দেশের ছয় ধর্মের অভিবাসীকে নাগরিকত্ব দেওয়া কথা বলা আছে। কিন্তু মুসলিমরা এ থেকে বাদ যাওয়ায় এতে ভারতের সংবিধানের ধারা লঙ্ঘন হয়েছে বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে, বিশেষত ১৪ এবং ১৫ ধারা।”

তাছাড়া, প্রতিবেদনটিতে এও বলা হয়েছে যে,“শ্রীলংকার মতো প্রতিবেশী দেশ যেখানে বৌদ্ধরা সংখ্যাগরিষ্ঠ আর তামিলরা নিপীড়িত এবং বার্মা (মিয়ানমার) যেখানে রোহিঙ্গা মুসলিমরা নিপীড়িত সেখানকার শরণার্থীদেরকে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ থেকে বঞ্চিত করা হল কেন সেটি ষ্পষ্ট নয়। একইসঙ্গে পাকিস্তানের নিপীড়িত আহমাদি এবং শিয়া মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরাও কেন সিএএ’র আওতায় সুরক্ষা পেল না সেটিও প্রশ্নসাপেক্ষ।”

সিআরএস প্রতিবেদনটি সরকারি ভাবে মার্কিন কংগ্রেসের রিপোর্ট না হলেও এ প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে কংগ্রেস সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের মতামতের ভিত্তিতেই।