জার্মানির ওই গবেষকরা বলছেন, কেবল জনসংখ্যা বৃদ্ধিই নয়, বডি মাস ইনডেক্সের (বিএমআই) ক্রমবর্ধমান হারও ভবিষ্যতে জনপ্রতি বেশি খাবার বা ক্যালরির প্রয়োজনীয়তার কথা জানান দিচ্ছে।
ক্যালরির এই চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হলে তা বিশ্বকে আরও বড় ধরনের অসাম্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন গবেষকরা।
তাদের এ গবেষণাটি জার্নাল প্লস ওয়ানে প্রকাশিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
গোটিংয়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষক দলের হিসাব বলছে, চলতি শতকের শেষ নাগাদ বিশ্বের মোট জনসংখ্যা যেখানে গিয়ে পৌঁছাবে, তাতেই ক্যালরির চাহিদা অতিরিক্ত আরও ৬০ শতাংশ বাড়বে। গড়পড়তা মানুষের উচ্চতা ও ওজনের সম্ভাব্য বৃদ্ধির কারণে বাড়তে পারে আরও ১৮ শতাংশ।
বিশ্বের জনসংখ্যা ২০১০ সালে ছিল প্রায় ৭০০ কোটি; ২১০০ সাল নাগাদ এটি এক হাজার ১০০ কোটির কাছাকাছি গিয়ে ঠেকবে বলে ধারণা জাতিসংঘের।
“বিএমআই ও উচ্চতার গড় বৃদ্ধির অনুমান থেকে আমরা ধারণা করছি, ২০১০ সালে জনপ্রতি মানুষের দৈনন্দিন যে শক্তির প্রয়োজন হতো, ২১০০ সাল নাগাদ তার তুলনায় ২৫৩ কিলোক্যালরি বেশি শক্তি লাগবে,” বলেছেন গবেষক দলের সদস্য ওয়ার্ল্ড ভেজিটেবল সেন্টারের লুৎজ ডিপেনবাস।
অর্থ্যাৎ, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অতিরিক্ত দুটি বড় বড় কলা কিংবা খানিকটা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই রাখতে হবে, বলেছেন তিনি।
ডিপেনবাস ও তার সহকর্মী গোটিংয়েন বিশ্ববিদ্যালয়েূর স্টিফান ক্লাসেন বলছেন, ভবিষ্যতে ক্যালরির এ অতিরিক্ত চাহিদা সাব-সাহারান আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলোকে বিপদে ফেলতে পারে বলে তাদের ধারণা।
জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান হারের তুলনায় অঞ্চলটিতে এখনই প্রয়োজনীয় ক্যালরির ঘাটতি আছে; ভবিষ্যতে চাহিদা আরও বাড়লে এবং বৈশ্বিক খাদ্য নীতি তা পূরণে ব্যর্থ হলে খাদ্য ও অর্থনৈতিক অসাম্য মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলেও গবেষকরা হুঁশিয়ার করেছেন।
খাবারের বাড়তি চাহিদা খাদ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে; তুলনামূলক ধনী দেশগুলো তা পূরণ করতে পারলেও দরিদ্র দেশগুলোর পক্ষে তা সম্ভব না হওয়ায় অপুষ্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাবে, বলেছেন তারা।