কিন্তু তারা কোথাও প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে এক রাউন্ডও গুলি ছুড়েনি বলে রাজ্যটির পুলিশ দাবি করে আসছে। এখন এই দাবিকে মিথ্যা প্রমাণ করে দেওয়ার মতো প্রমাণ সামনে এসেছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।
শনিবার রাজ্যটির কানপুরে পুলিশ ও প্রতিবাদকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষের ঘটনার একটি ভিডিও পাওয়া গেছে, তাতে কানপুরের এক পুলিশ সদস্যকে তার রিভলবার দিয়ে গুলি করতে দেখা গেছে।
উত্তর প্রদেশে যারা মারা গেছে তাদের কেউ পুলিশের গুলিতে নিহত হয়নি বলে দাবি করে আসছে রাজ্যটির পুলিশ। তাদের এ দাবির মধ্যেই এই ভিডিওটি সামনে এসেছে।
শনিবার উত্তর প্রদেশের যে সব শহরে নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে কানপুরও আছে। এখানে প্রতিবাদকারীরা পুলিশের একটি পোস্টে আগুন দেয়।
এনডিটিভি জানিয়েছে, আলোচিত ভিডিওটিতে নিরাপত্তা জ্যাকেট ও হেলমেট পরা পুলিশের ওই সদস্যকে যেদিকে সংঘর্ষ হচ্ছিল সেদিকে রিভলবার ও লাঠি হাতে হেঁটে যেতে দেখা গেছে। তাকে হেঁটে একপাশে গিয়ে গুলি করতেও দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার থেকে উত্তর প্রদেশজুড়ে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে কেউ নিহত হয়নি বলে দাবি করেছেন উত্তর প্রদেশের পুলিশ প্রধান ওপি সিং।
শনিবার এনডিটিভিকে তিনি বলেন, “আমরা এমনকি একটি গুলিও ছুড়িনি।”
চলমান সহিংসতায় শুধু প্রতিবাদকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন আরেক পুলিশ কর্মকর্তা। বৃহস্পতিবার থেকে মোট ২৬৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে তাদের মধ্যে ৫৭ জনের শরীরে গুলির আঘাত রয়েছে বলে উত্তর প্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে।
উত্তর প্রদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (ল এন্ড অর্ডার) প্রাভিন কুমার বলেন, “উত্তর প্রদেশজুড়ে চার শতাধিক খালি কার্তুজ পাওয়া গেছে। এটি প্রমাণ করে প্রতিবাদকারীরা দেশে তৈরি অস্ত্র দিয়ে গুলি ছুড়ছে। যারা মারা গেছে হয় তারা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নিরপরাধ লোক অথবা উত্তেজিত জনতারই অংশ।”
শুক্রবার উত্তর প্রদেশের ১৩টি জেলাজুড়ে চলা প্রতিবাদে ১৩ জন নিহত হয়। এ দিন সাহারানপুর, দেওবন্দ, শামলি, মুজাফ্ফরনগর, মিরাট, গাজিয়াবাদ, হাপুর, সম্ভল, আলিগড়, বেরাইচ, ফিরোজাবাদ, কানপুর, ভাদোহি ও গোরখপুর জেলায় প্রতিবাদ হয়।
পুলিশ এ পর্যন্ত ৭০৫ জন প্রতিবাদকারীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং ১২৪টি মামলা দায়ের করেছে।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনটিতে ধর্মকে নাগরিকত্ব পরীক্ষার উপলক্ষ করা হয়েছে। এবারই প্রথম ভারতে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে নির্যাতিত অমুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই মূলত নাগরিকত্ব আইনটি সংশোধন করা হয়েছে।
সমালোচকদের ভাষ্য, এ আইন ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের বুকে আঘাত। সংখ্যালঘু মুসলমানদের আরও কোণঠাসা করতে বিজেপি ‘হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা’ বাস্তবায়নই এ আইনের লক্ষ্য, বলছেন তারা।