গুলিতে জখম দিল্লির ৩ ছাত্র, গুলির কথা অস্বীকার পুলিশের

দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদকারীদের দিকে পুলিশ গুলি ছুড়েছিল কি না, তা নিয়ে বির্তক দেখা দিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2019, 06:32 AM
Updated : 17 Dec 2019, 06:43 AM

রোববার ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও সংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব দিল্লির বাসিন্দারা প্রতিবাদে নেমেছিল, তখন পুলিশের সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।

ওই সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন পুলিশসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

দিল্লির সরকারি সফদারজং হাসপাতালের মেডিকেল সুপার এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, জামিয়ার দুই প্রতিবাদকারী গুলির জখম নিয়ে তাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

কিন্তু দিল্লি পুলিশের দাবি, প্রতিবাদকারীদের দিকে গুলি ছুড়েনি তারা।

আহত ওই দুই ছাত্র আশঙ্কামুক্ত অবস্থায় আছে বলে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে একজন জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ-র শিক্ষার্থী ২২ বছর বয়সী আজাজ বলে নিশ্চিত হয়েছে এনডিটিভি। তিনি হাসপাতালটির এক জেনারেল ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন।

ওয়ার্ডে আসা দর্শনার্থীদের ওপর নজর রাখতে সেখানে দুই সদস্যকে মোতায়েন করেছে দিল্লি পুলিশ।

রোববার সন্ধ্যায় আজাজের বুকে গুলি লাগে বলে নিশ্চিত করেছে তার পরিবার। তবে ওই প্রতিবাদে তার কোনো ভূমিকা ছিল না বলে দাবি করেছেন তারা।

আজাজের জখম নিয়ে প্রথমে বিভিন্নরকম ব্যাখ্যা দিয়েছে পুলিশ। পরে দাবি করেছে, আজাজ কাঁদুনে গ্যাসের শেল থেকে ছিটকে যাওয়া টুকরোর আঘাতে জখম হয়েছেন।

 

একই হাসপাতালে গুলির জখম নিয়ে ভর্তি আরেক আহতের নাম শোয়িব খান (২৩) বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার পায়ে ‘প্যালেটের’ আঘাত লেগেছে বলে জানিয়েছে তারা।  

পরে পুলিশের দেওয়া ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ‘প্যালেটের’ জখম মানে হচ্ছে কাঁদুনে গ্যাসের শেলের টুকরোর অংশের আঘাতে হওয়া জখম। 

কিন্তু আজাজ যখন গুলিবিদ্ধ হয়, ঠিক তার কয়েক মূহুর্ত পর ধারণ করা হয়েছে বলে মনে হওয়া একটি মোবাইল ফোনের ভিডিওতে তার আশপাশে কাঁদুনে গ্যাসের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।  

ভাইরাল হওয়া আরেকটি ভিডিওতে দিল্লির হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া তৃতীয় আরেক জন মোহাম্মদ তামিনকে দেখা যায়, যিনি তার উরুতে গুলি লেগেছে বলে দাবি করেছেন।

তামিনকে হাসপাতাল থেকে দেওয়া ডিসচার্জ রিপোর্টটি তাদের হাতে এসেছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে। রিপোর্টে তার বাম উরু থেকে একটি ‘ফরেন বডি’ বের করা হয়েছে, এমনটি বলা হয়েছে, আর ‘মেডিকেল হিস্টোরি’ অংশে বলা হয়েছে, “বাম পায়ে গুলির আঘাত লেগেছে।”   

দক্ষিণপূর্ব দিল্লির শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা চিন্ময় বিসওয়াল এক বিবৃতিতে বলেছেন, “মেডিকেল পেপারে ‘কথিত যে ইতিহাস’ লেখা থাকে তার অর্থ সবাই বুঝবেন বলে আশা করি আমি। এটি হচ্ছে চিকিৎসার জন্য আসার পর নিজের আঘাত সম্পর্কে রোগী দায়িত্বরত চিকিৎসককে যা বলেছেন তাই।” 

আরেক বিবৃতিতে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের পরিচালক বলেছেন, “ওই রোগীকে হাসপাতালে আনার পর তার সঙ্গে থাকা লোকজন গুলিতে আহত হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করছিল। যাইহোক, চিকিৎসার সময়, কোনো গুলি অপসারণ করা হয়নি, সেটি ছিল একটি অজ্ঞাত বস্তু।”

অপরদিকে তামিন এনডিটিভির সঙ্গে কথা বলার সময় জানিয়েছেন, কাঁদুনে গ্যাসের ফায়ারিংয়ে নয়, পুলিশের এক সদস্য খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করেছে।