নেটোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সম্মেলন ঘিরে বিভক্তি, একতা চায় যুক্তরাজ্য

নেটো জোট প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সম্মেলন। কিন্তু এ সম্মেলনকে ঘিরে জোটের সদস্যদের মধ্যে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

>>রয়টার্স
Published : 3 Dec 2019, 02:16 PM
Updated : 3 Dec 2019, 02:16 PM

সংশয়ে পড়েছে এ সামরিক জোটটির ভবিষ্যৎ। তাই এবারের সম্মেলনের আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জোটের অংশীদারদের মধ্যে একতা বজায় রাখাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন।

মঙ্গলবার থেকে দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে এ নেটো সম্মেলন। তার আগেই তুরস্ক জানিয়ে দিয়েছে, তারা বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোতে নেটোর প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা সমর্থন করবে না।

নেটো জোটের সদস্যরা কুর্দি ওয়াপিজি মিলিশিয়াকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলে চিহ্নিত না করা পর্যন্ত তুরস্ক নেটো প্রতিরক্ষা পরিকল্পনার বিরোধিতা করে যাবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু জোটের সদস্যরা তুরস্কের এ দাবি মানার কোনো আগ্রহ দেখায়নি।

এর আগে গতমাসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোও নেটো জোটের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে এ জোট ‘ব্রেন ডেড’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। জোটের প্রতি ওয়াশিংটনের খামখেয়ালিপনা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন তিনি।

ম্যাক্রোঁর এ মন্তব্যর পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান উল্টো ম্যাক্রোকেই ‘ব্রেন ডেড’ বলে আকমণ করেন। সন্ত্রাস সম্পর্কে ম্যাক্রো অজ্ঞ বলে অভিযোগ করেন এরদোয়ান। উপরন্তু নভেম্বরে ম্যাক্রোঁ ওয়াইপিজি নেতৃত্বধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) এর এক কর্মকর্তাকে অভ্যর্থনা জানালেও প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর নেটো জোটে ইউরোপীয় দেশগুলোর যথেষ্ট অবদান না রাখা নিয়ে তার বার বার সমালোচনার কারণে জোটের সদস্যদের মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্ক বেড়েছে।

ম্যাক্রোঁ এবং এরদোয়ান দুইজনই এবারের সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। থাকবেন জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেলও। জোটের নেতারা এরই মধ্যে লন্ডনে সমবেত হতে শুরু করেছেন।

আর ঠিক এ সময়ই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সেই ‘ব্রেন ডেড’ মন্তব্যর কড়া সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সম্মেলনের প্রাক্কালে লন্ডনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ম্যাক্রোর ওই মন্তব্যকে খুবই জঘন্য আখ্যা দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “ম্যাক্রোঁর বক্তব্য নেটো জোটের জন্য অপমানজনক। তিনি এভাবে বলতে পারেন না।”

জোটের সদস্যদেশগুলোর নেতাদের মধ্যে এমন উত্তেজনা এবং বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী জনসন চাইছেন ইউরো-আটলান্টিক অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিয়ে জোটের অংশীদাররা যেন নিজেদের সব বিভাজন ভুলে যান। সম্মেলনে জনসন তাই সবাইকে একতাবদ্ধ থাকার আহ্বানই জানাবেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।