যুক্তরাষ্ট্রের হংকং আইনের জবাবে চীনের নিষেধাজ্ঞা

হংকংয়ে বিক্ষোভের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র যে আইন করেছে তার পাল্টা জবাবে হংকংয়ে মার্কিন সামরিক উপস্থিতির ওপর কড়াকড়ির পাশাপাশি কয়েকটি মার্কিন এনজিও’র ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Dec 2019, 05:00 PM
Updated : 2 Dec 2019, 05:54 PM

সোমবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, “যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক জাহাজ এবং বিমান হংকংয়ে ‍প্রবেশ করতে পারবে না।”

সাধারণ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর জাহাজ বছরে একবার হংকং ভিজিটে যায়। তবে সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনার কারণে সময়ে সময়ে মার্কিন রণতরী হংকংয়ে ভিড়তে দেয় না চীন। অগাস্টে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর দুটো জাহাজকে হংকংয়ে ভিড়তে দেওয়া হয়নি। সেপ্টেম্বরেও মার্কিন একটি রণতরীকে হংকংয়ে ঢুকতে দেয়নি চীন।

এপ্রিলে হংকংয়ে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহরের ইউএসএস ব্লু রিজ উভচর কমান্ড শিপ। জুনে হংকংয়ে বিক্ষোভ শুরুর আগে এটিই ছিল সেখানে যাওয়া মার্কিন নৌবাহিনীর সর্বশেষ জাহাজ।

এবার চীন বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের নৌজাহাজ এবং বিমানের হংকংয়ে প্রবেশের অনুরোধই বিবেচনা করবে না। দরকার পড়লে বাড়তি আরো পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও চীন শাসিয়েছে।

ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক যেসব এনজিও’র ওপর চীন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে সেগুলোর মধ্যে আছে- মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’, ফ্রিডম হাউজ, দ্য ন্যাশনাল এন্ডওমেন্ট ফর ডেমোক্র্যাসি, দ্য ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্স এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউট।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়াং বলেছেন, হংকংয়ের বিক্ষোভকারীদেরকে সমর্থন দেওয়ার জন্য ওই সংগঠনগুলোকে মূল্য দিতে হবে। হংকংয়ের বিক্ষোভে তাদেরও কিছু দায় আছে। সেকারণেই তাদের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা।

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে হুয়া আরো বলেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ভুল সংশোধন করে আমাদের অভ্যন্তরীন বিষয়ে নাক গলানো বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। হংকংয়ের স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধিসহ চীনের সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রাখতে বেইজিং প্রয়োজনে আরো পদক্ষেপ নিতে পিছপা হবে না।”

গত ২৮ নভেম্বর হংকংয়ে বিক্ষোভের সমর্থনে করা একটি বিলে স্বাক্ষর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই এর বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানায় চীন। পাল্টা জবাবে আইনের খসড়া  প্রণয়নকারীদেরকে চীনা মূল ভূখন্ডসহ হংকং এবং ম্যাকাউয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধের তালিকায় রাখার ইঙ্গিতও তখন দিয়েছিল চীন। সে মতোই এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিল দেশটি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে গেলে মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজের ওপর চীনের নিষেধাজ্ঞায় খুব একটা বিরূপ প্রভাব পড়বে না। কারণ, ওই এলাকায় যুক্তরাষ্ট্র অনেক নৌঘাটি ব্যবহার করতে পারে। তবে এ থেকে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কে উত্তেজনা বাড়ারই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।