হংকংয়ে পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ‘এখনও কয়েকশ বিক্ষোভকারী’

হংকংয়ে পুলিশের ঘিরে রাখা পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর এখনও ১০০ থেকে ২০০ ‘কট্টরপন্থি’ বিক্ষোভকারী অবস্থান করছেন বলে চীন নিয়ন্ত্রিত শহরটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2019, 11:31 AM
Updated : 19 Nov 2019, 11:31 AM

রোববার রাতভর গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর তুমুল সংঘাতের পর থেকেই পুলিশ ওই ক্যাম্পাসটি ঘিরে রাখে।

ভেতরে থাকা বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছয়শর মতো এরই মধ্যে ক্যাম্পাসটি ত্যাগ করেছেন বলে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লামের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে। 

মঙ্গলবার সকালে ১৮ বছরের নিচের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসটি ছাড়ে; তাদের সঙ্গে মাধ্যমিক স্কুলের অধ্যক্ষসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেশ ক’জন কর্মকর্তাও ছিলেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো নিশ্চিত করেছে।

অপ্রাপ্তবয়স্কদের নাম ও পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ তাদের ছেড়ে দিয়েছে; তবে ১৮ বছরের বেশি বয়সী বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

তাদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা বাধানোর অভিযোগ আনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দোষী প্রমাণিত হলে এ অভিযোগে একেকজনের সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

এর আগে রোববার শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারীদের রাত ১০টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিল পুলিশ।

বিক্ষোভকারীরা গত সপ্তাহ থেকে এ পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের আন্দোলনের অন্যতম ঘাঁটিতে পরিণত করে; পুলিশ বেশ কয়েকবার ক্যাম্পাসের ভেতর ঢুকতে চাইলেও বিক্ষোভকারীরা আগুন জ্বালিয়ে ও পেট্রল বোমা ছুড়ে তাদের বাধা দেয়।

সোমবার শতাধিক বিক্ষোভকারী দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেটে আহত হওয়ার পর গ্রেপ্তার হন ।

এদিন বিক্ষোভকারীদের দিকে কাঁদানে গ্যাসের এক হাজার ৪৫৮টি শেল, এক হাজার ৩৯১টি রাবার বুলেট, ৩৯৫টি বিন ব্যাগ রাউন্ডস ও ২৬৫টি স্পঞ্জ বুলেট ছোড়া হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

রোববার থেকে ক্যাম্পাসের ভেতরে অবরুদ্ধ থাকা বিক্ষোভকারীদের রসদ ফুরিয়ে আসছে বলে গণতন্ত্রপন্থি আইনপ্রণেতা টেড হুই জানিয়েছেন।

বেরিয়ে আসা এক বিক্ষোভকারী ভেতরে থাকারা ‘ক্ষুধা ও ঠাণ্ডায়’ বিপর্যস্ত বলে জানিয়েছেন।

“অনেকেই আঘাত পেয়েছেন, কিন্তু সেখানে চিকিৎসার সরঞ্জামের ঘাটতি আছে,” বলেছেন তিনি।

১৬ বছর বয়সী আরেক বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, পরিস্থিতি দেখে তিনি ‘আত্মসমর্পণের’ পথ বেছে নিয়েছেন।

“গতকাল (সোমবার) সকাল থেকেই আমরা পালানোর চেষ্টা করছিলাম। আমরা কোনো পথই খুঁজে পাইনি, ধরা পড়লে অভিযুক্ত হওয়ারও ভয় ছিল। এটাই ছিল একমাত্র পথ, আমি মরিয়া হয়ে উঠেছিলাম,” ভাষ্য তার।

হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম সব বিক্ষোভকারীকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা ‘শান্তিপূর্ণ উপায়ে বেরিয়ে এলে’ সহিংসতা হবে না বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

পরিস্থিতি অনুযায়ী পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে হুঁশিয়ারও করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার হংকংয়ের নতুন পুলিশপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া ক্রিস ট্যাং বলেছেন, পুলিশের একার পক্ষে এ ধরনের বিক্ষোভ থামানো সম্ভব নয়।

“এই অরাজকতা তখনই থামবে, যখন সমাজ বিক্ষোভকারীদের এ সহিংসতার নিন্দা জানাবে,” বলেছেন তিনি।