বিক্ষোভ ঠেকাতে ইন্টারনেট বন্ধ করেছে ইরান

সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ বাড়তে থাকায় ঘরে-বাইরে ইরানিদের একের সঙ্গে অপরের যোগাযোগ বন্ধ করতে প্রায় দেশব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করেছে ইরান।

>>রয়টার্স
Published : 18 Nov 2019, 02:26 PM
Updated : 18 Nov 2019, 02:26 PM

রোববার ইরান এ পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশটিতে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভে তিনদিনে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ জনে। আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। আটক হয়েছে ১ হাজার জন। ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ এ খবর জানিয়েছে।

বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ তদারককারী গ্রুপ নেটব্লকস জানায়, শুক্র এবং শনিবারেও ইরানে ব্যাপক নেট বিভ্রাট ঘটেছে। ইরানে ব্যাপকভাবে ব্যবহার হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রামও বন্ধ হয়ে গেছে।

মোবাইলে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ার চেষ্টা করলেই দেখা যাচ্ছে রেকর্ড করা একটি বার্তা। তাতে লেখা রয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

ইরানে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ক্ষমতায় আসার পর দেশটিতে এমনভাবে নেট সংযোগ বন্ধ থাকতে এর আগে কখনো দেখা যায়নি। দেশটি নেট বিচ্ছিন্ন থাকার এটিই সবচেয়ে বড় ঘটনা বলে জানিয়েছে ইন্টারনেট ফার্ম ওরাকল।

রোববার বিক্ষোভের মধ্যে এক বক্তব্যে সরকারের জ্বালানির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সমর্থন করেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। সরকারের প্রধান তিন বিভাগ প্রেসিডেন্সি, বিচার বিভাগ ও পার্লামেন্টের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত হওয়ায় তিনি এটিকে সমর্থন করছেন বলে জানান।

বিক্ষোভে ইরানি নাগরিকদের প্রাণহানির কথা স্বীকার করলেও দেশের  অভ্যন্তরীণ বিরোধী শক্তি এবং বিদেশি শত্রুরাও ইরানকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলে দোষারোপ করেন খামেনি।

তবে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছেই। বিক্ষোভকারীরা ‘খামেনি নিপাত যাক’ ধ্বনিতে স্লোগান দিচ্ছে। অন্তত দুজন আইনপ্রণেতা প্রতিবাদস্বরূপ পদত্যাগও করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র ইরানিদের সরকারবিরোধী বিক্ষোভকে সমর্থন দিয়েছে।

ইরানে নেট সংযোগ ফিরিয়ে আনার পথ খুঁজে বের করতে ইরানি আন্দোলনকারীরা যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানাচ্ছে। যোগাযোগবিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকলে চলমান দমনাভিযানের জন্য ইরানকে জবাবদিহিতা করানো কঠিন হয়ে পড়বে বলে উদ্বিগ্ন মানবাধিকার কর্মীরা। তাছাড়া, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ইরানি বিক্ষোভকারীরাও বিক্ষোভ কর্মসূচির পরিকল্পনা করতে সমস্যায় পড়বে।