ট্রাম্প ঘুষ সাধার কথা স্বীকারই করেছেন: ন্যান্সি পেলোসি

ইউক্রেইন কেলেঙ্কারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এরইমধ্যে তার ঘুষ সাধার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বলে মনে করেন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।

>>রয়টার্স
Published : 15 Nov 2019, 08:25 AM
Updated : 15 Nov 2019, 08:25 AM

তিনি বলেন, “নির্বাচনের সময়ে একটি ভুয়া তদন্ত নিয়ে সরকারি বিবৃতি দেওয়ার বিনিময়ে সামরিক সহায়তা দেওয়া বা প্রত্যাহার করে নেওয়ার প্রস্তাবকে ঘুষই বলে। ওটা নিজের সুবিধার জন্য ঘুষ সাধা।”

আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ওই নির্বাচনে ট্রাম্প তার সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডেমোক্রেট নেতা জো বাইডেন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করতে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনোস্কিকে টেলিফোনে চাপ দিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা ওই ফোনালাপের তথ্য হাতে পেয়েছে বলে দাবি করেছে।

যার ভিত্তিতে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ডেমোক্রেট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্তের ঘোষণা দেয়।

গত কয়েক সপ্তাহের রুদ্ধদ্বার শুনানি প্রক্রিয়া চলার পর বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দা কমিটির সামনে অভিশংসন তদন্তের প্রকাশ্য শুনানি শুরু হয়।

বৃহস্পতিবার পেলোসি বলেন,“এখন পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট কী কী স্বীকার করেছে দেখুন এবং বলেছেন, তিনি সঠিক কাজই করেছে। আমি বলবো, সেগুলো সম্পূর্ণরূপে অন্যায়। ওটা ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব ছিল।”

যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেইনকে প্রায় ৩৯ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার সামরিক সহায়তা দেয়। দেশের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়াপন্থি বিদ্রোহীদের দমনে ব্যবহারের জন্য মিত্র দেশ ইউক্রেইনকে ওই অর্থ দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস।

ওই সহায়তা ব্যবহার করে ট্রাম্প নিজের রাজনৈতিক সুবিধার জন্য ইউক্রেইনকে চাপ দিতে চেষ্টা করেছিলেন কিনা এখন সেটাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ইউক্রে্ইনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির কথোপকথনে সামরিক সহায়তায় বিষয়টি এসেছিল জানিয়ে ট্রাম্প এ বিষয়ে অন্যায় কিছু না করার দাবি করেছেন। বরং তিনি বলেছেন, “সামরিক সাহায্য প্রত্যাহারের কথা বলে আমি শুধুমাত্র ইউরোপের দেশগুলো থেকে সহায়তার হার বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলাম।”

বুধবার প্রকাশ্য শুনানির দিন প্রচুর সাংবাদিক ও আইনপ্রেণেতা শুনানিকক্ষে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া কোটি কোটি মানুষ টেলিভিশনের পর্দায় শুনানি প্রক্রিয়া সরাসরি দেখেছেন।

প্রথমদিন প্রতিনিধি পরিষদ থেকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তিন শীর্ষ কূটনীতিককে ডেকে পাঠানো হয়।

তাদের মধ্যে উইলিয়াম বিল টেলর (কিয়েভে মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অফেয়ার্স) ও জর্জ কেন্ট বুধবার সাক্ষ্য দেন।

ইউক্রেইনে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মেরি ইউভানোভিচ শুক্রবার সাক্ষ্য দেবেন।

আগামী শনিবার হোয়াইট হাউজের বাজেট কর্মকর্তা মার্ক স্যান্ডির সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে।

মার্কিনিরা এই প্রথম সরাসরি শুনানিতে ইউক্রেইন বিষয়ক ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট লোকজনের কথা শুনছে। যার ফলে পরবর্তীতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনের জন্য ডেমোক্রেট অধুষ্যিত প্রতিনিধি পরিষদের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনার পথ সুগম হতে পারে।

আর তখন রিপাবলিকান অধুষ্যিত সিনেটে ট্রাম্পকে ওইসব অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা এবং পদ থেকে অপসারণ করা হবে কিনা- তা নিয়ে বিচারের পট প্রস্তুত হবে। ফলে এ শুনানি শুরু হওয়ায় ঝুঁকিতে পড়েছে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির ভবিষ্যৎ।