‘চমৎকার’ বৈঠকেও মিটল না ট্রাম্প-এরদোয়ান বিরোধ

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা এস-৪০০ কেনার প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে আসতে চাপাচাপি করলেও   আঙ্কারার কাছ থেকে কোনো প্রতিশ্রুতি আদায় করতে পারেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2019, 10:44 AM
Updated : 14 Nov 2019, 10:44 AM

বুধবার ওয়াশিংটনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ানের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দি গেরিলাদের ওপর তুর্কি অভিযান নিয়ে বিরোধেরও কোনো মীমাংসা হয়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটবিরোধী লড়াইয়ে কুর্দি ওয়াইপিজি গেরিলাদের নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সকে (এসডিএফ) মার্কিন বাহিনী অস্ত্রশস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করেছিল।

ট্রাম্প অক্টোবরে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে সৈন্য সরিয়ে নিলে তুরস্ক সেখানে কুর্দিবিরোধী অভিযান শুরুর ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে আঙ্কারার বিরোধ শুরু হয়।

তুরস্কের রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাপনা ক্রয় নিয়েও ওয়াশিংটন শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে।

বুধবারের বৈঠকের পর ট্রাম্প এস-৪০০ ক্রয়কে তুরস্কের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির ক্ষেত্রে ‘গুরুতর প্রতিবন্ধকতা’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন।

বিরোধ মীমাংসায় অগ্রগতির লক্ষণ দেখা না গেলেও এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠক ‘চমৎকার’হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

“এস-৪০০ এর মতো সংবেদনশীল রুশ সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় তুরস্কের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে এ নিয়ে কথা বলছি। আমরা আজকে এটি নিয়ে কথা বলেছি, সামনেও বলবো, আশা করছি আমরা পরিস্থিতির সমাধান করতে পারবো,” বলেছেন তিনি।

হোয়াইট হাউসে বৈঠকের পর ট্রাম্প নিজেকে এরদোয়ানের ‘মহা ভক্ত’ হিসেবে দাবি করার পাশাপাশি তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ‘কার্যকর’ আলোচনা হয়েছে জানালেও সুনির্দিষ্ট কোন কোন ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে তা বলতে পারেননি।

সংবাদ সম্মেলনে এরদোয়ান বলেন, দুই দেশের মধ্যে যেসব বিষয়ে বিরোধ আছে, কেবল আলোচনার মাধ্যমেই সেগুলোর সমাধান সম্ভব।

দুই প্রেসিডেন্টের যৌথ সংবাদ সম্মেলনের কয়েক মিনিট পরই হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে আঙ্কারার এস-৪০০ ক্রয় নিয়ে ফের উদ্বেগ জানানো হয়।

ওয়াশিংটনের ভাষ্য, আঙ্কারা রাশিয়ার কাছ থেকে যে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা কিনছে তা নেটোর প্রতিরক্ষা নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এস-৪০০কে লকহিড মার্টিনের বানানো এফ-৩৫ স্টিলথ জঙ্গিবিমানের জন্য হুমকি বলেও উল্লেখ করছে তারা।

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের ‘ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক’ নিয়েও পেন্টাগন উদ্বিগ্ন। এস-৪০০ কেনা থেকে বিরত রাখতে ওয়াশিংটন আঙ্কারাকে নিষেধাজ্ঞার জালে বেঁধে ফেলারও হুমকি দিয়েছে।

তুরস্ক এ হুমকিকে পাত্তা না দিয়েই জুলাই থেকে এস-৪০০ এর প্রথম চালান গ্রহণ শুরু করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কে এফ-৩৫ এর বিক্রি বাতিল করেছে এবং যুদ্ধবিমানটি বানানোর একটি বহুজাতিক প্রকল্প থেকে আঙ্কারাকে সরিয়ে দিয়েছে।