অস্ট্রেলিয়ায় দাবানল: আরও একজনের লাশ উদ্ধার

অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে গত এক সপ্তাহে ছড়িয়ে পড়া দাবানলে মৃত চতুর্থ ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2019, 09:06 AM
Updated : 14 Nov 2019, 09:25 AM

বৃহস্পতিবার নিউ সাউথ ওয়েলসের দাবানল কবলিত উত্তর অংশের একটি এলাকা থেকে ৫৮ বছর বয়সী একজন পুরুষের মৃতদেহ পাওয়া যায় বলে বিবিসি জানিয়েছে।

নিউ সাউথ ওয়েলস ও কুইন্সল্যান্ডজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ১২০টিরও বেশি দাবানল নিয়ন্ত্রণে লড়াই করে যাচ্ছে দমকল কর্মীরা। এর মধ্যেই দাবানলের ভয়াবহ বিপজ্জনক পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দাদের সতর্কও করা হয়েছে।

পুলিশ ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছে।

ওই কিশোরের লাগানো আগুনে ব্রিসবেন থেকে ৬৫০ কিলোমিটার উত্তরের ইয়েপ্পুন শহরের ১৪টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে কুইন্সল্যান্ড পুলিশ জানিয়েছে, ।

বসন্তেই দাবানলের এমন মাত্রা ও ভয়াবহতায় উদ্বিগ্ন দমকল কর্মকর্তারা ‘গ্রীষ্মের ভয়াবহ সময় এখনও সামনে পড়ে আছে’ বলে সতর্ক করেছেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অবস্থা শোচনীয় অবস্থা হতে পারে, আগাম এমন সতর্কতা জানালো হলেও সরকার তা কানে নেয়নি বলে বৃহস্পতিবার সাবেক কয়েকজন সাবেক দমকল প্রধান অভিযোগ করেছেন।

“আমাদের নির্বাচিত নেতারা যদি এই পরিস্থিতি নিয়ে মাথা না ঘামান এবং কার্বন নিঃসরণের মাত্রা প্রয়োজনীয় পরিমাণে না কমান তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না,” বলেছেন তাসমানিয়ার সাবেক দমকল প্রধান মাইক ব্রাউন।

নিউ সাউথ ‍ওয়েলসে শুক্রবার থেকে ছড়িয়ে পড়া দাবানলে চারজনের মৃত্যু ও অন্তত ৩০০ বাড়িঘর পুড়ে গেছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

পুলিশ বলেছে, বৃহস্পতিবার উদ্ধার করা মৃতদেহটি সিডনির ৪০০ কিলোমিটার উত্তরের শহর কেম্পসির কাছের একটি পোড়া জমিতে পাওয়া গেছে। মৃত ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।

এর আগে দাবানলে বিপর্যস্ত নিউ সাউথ ওয়েলসের বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশ ৬৯ বছর বয়সী ভিভিয়ান চ্যাপলেইন, ৬৩ বছর বয়সী জুলি ফ্লেচার এবং জর্জ নোলের মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল। নোলের বয়স নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তাপমাত্রা আগের তুলনায় কিছুটা নেমে যাওয়ায় দাবানল নিয়ন্ত্রণে লড়াইরত দমকল কর্মীদের জন্য সুবিধা হয়েছে। তারপরও  অস্ট্রেলিয়ার পূর্বাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকার বাসিন্দারাই এখনও সতর্কাবস্থায় আছেন।

বৃহত্তর সিডনিতে মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো ‘বিপর্যয়কর’ মাত্রার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পূর্ব উপকূলের এ দাবানল মোকাবেলায় অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য অঞ্চল থেকে দমকল কর্মীরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সহযোগিতা করছে নিউ জিল্যান্ডও।

বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা অস্ট্রেলিয়ার এ দাবানল মৌসুমের বিস্তৃতি ও ভয়াবহ মাত্রার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনকেই কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন।

২০১৭ ও ২০১৮ সাল দেশটির ইতিহাসের যথাক্রমে চতুর্থ ও তৃতীয় সর্বোচ্চ উষ্ণ বছর ছিল বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

গত বছরের গ্রীষ্ম দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ গ্রীষ্মেরও স্বীকৃতি পেয়েছে।