হ্যালি তার লেখা নতুন একটি স্মৃতিচারণমূলক বইয়ে এমন অভিযোগ করেছেন হোয়াইট হাউসের সাবেক দুই শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এর একজন হচ্ছেন, হোয়াইট হাউজের সাবেক চিফ অব স্টাফ জন কেলি এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন।
হ্যালি বলেন, তারা তাকে (হ্যালি) ট্রাম্পের কিছু দাবির বিরোধিতা করতে বলেছিলেন। দেশকে বাঁচাতেই ট্রাম্পের এ বিরোধিতা করতে বলা হচ্ছে বলে হ্যালিকে যুক্তি দেখিয়েছিলেন তারা।
এ সম্পর্কে হ্যালি লেখেন, “কেলি এবং টিলারসন আমাকে এই বিশ্বাস দিতে চেষ্টা করেছিলেন যে, তারা প্রেসিডেন্টের বিরোধিতা করার মানে এই নয় যে তারা তার অবাধ্য হচ্ছেন, বরং তারা দেশকেই বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।”
“তারা বারবার আমাকে বলেছেন, তারা দেশকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।”
আগামী মঙ্গলবার হ্যালির বইটি প্রকাশ পাবে বলে বিবিসি জানিয়েছে । প্রকাশের আগেই ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ পত্রিকা বইটির একটি কপি পেয়ে এ খবর জানিয়েছে।
বইতে হ্যালি লেখেন, প্রেসিডেন্টকে লাগামহীনভাবে ছেড়ে দেওয়া হলে লোকজন মারা পড়বে বলেও তাকে সতর্ক করেছিলেন টিলারসন।
তবে তিনি টিলারসন ও কেলির এ আহ্বান সড়া দেননি বলে দাবি করেছেন ৪৭ বছরে এই কূটনীতিক। তারমতে, “ওটা বিপজ্জনক এবং আক্রমণাত্মক হত।”
“বরং আমি তাদের বলেছি, এসব আমাকে না বলে তাদের উচিত সরাসরি প্রেসিডেন্টকে বলা। আমি আমাকে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ না করার কথাও বলেছি।”
“তাদের উচিত ছিল প্রেসিডেন্টের কাছে গিয়ে নিজেদের মতপার্থক্যের কথা বলা এবং প্রেসিডেন্ট যেটা করছেন সেটা পছন্দ না হলে চুপ থাকা কিংবা পদত্যাগ করা। কিন্তু একজন প্রেসিডেন্টকে অবজ্ঞা করা…এটি সত্যিই ভীষণ বিপজ্জনক বিষয় এবং এটি সংবিধান পরিপন্থি। একইসঙ্গে এটা আমেরিকার জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধেও যায়। এটা আক্রমণাত্মক ব্যাপার।”
হ্যালি জানান, তিনি ট্রাম্পের বেশিরভাগ বৈদেশিক নীতিই সমর্থন করতেন। কিন্তু হোয়াইট হাউজের অন্যান্য অনেকেই ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত আটকে দেওয়া কিংবা শ্লথ করে দিতে তৎপর ছিল।
অবশ্য ২০১৭ সালে হেলসিঙ্কিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি ট্রাম্প যেভাবে সামলেছিলেন তার সঙ্গে হ্যালি একমত হতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।
হেলসিঙ্কির বৈঠক নিয়ে দ্বিমত থাকলেও ট্রাম্পের যে বেশকিছু সিদ্ধান্ত হ্যালি সমর্থন করেছেন সেগুলো তিনি বইতে উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে ইরান পরমাণু চুক্তি ও প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়া অন্যতম।
সিবিএস-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্তের কড়া সমালোচনাও করেছেন হ্যালি। তিনি বলেন, “এটি অনেকটা একজন সরকারি কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার মত।”
ওদিকে, এক টুইটে ট্রাম্প বই লেখার জন্য নিকি হ্যালিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখেন, “শুভকামনা নিকি!”
বইতে হ্যালির দাবি নিয়ে টিলারসন তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে কেলি বলেন, তিনি সবসময় প্রেসিডেন্টকে সব বিষয়ে অবগত রাখাতে চেয়েছেন।