বিবিসি জানায়, যে পুলিশ নিহত তরুণীর শয়নকক্ষের জানালা লক্ষ্য করে গুলি করেছিলেন তিনি একজন শ্বেতাঙ্গ। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের গুলিতে নির্দোষ কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার তালিকায় নতুন আরেকটি নাম যোগ হল।
নিহত ২৮ বছরের তরুণী অ্যাটাতিয়ানা জেফারসন ‘ফোর্ট ওর্থ’ আবাসিক এলাকায় আট বছরের ভাগ্নের সঙ্গে থাকতেন। শুক্রবার মধ্যরাতের পর স্থানীয় সময় রাত আড়াইটার দিকে গুলির ওই ঘটনা ঘটে।
সে সময় জেফারসন ভাগ্নের সঙ্গে ‘ভিডিও গেম খেলছিলেন’। বাইরে হট্টগোল শুনে কী হয়েছে তা দেখতে তিনি জানালার কাছে যান বলে দাবি নিহতের পরিবারের আইনজীবীর।
ঘটনার সূত্রপাত জেফারসনের প্রতিবেশী জেমস স্মিথের (৬২) একটি ফোন থেকে। স্মিথ মধ্যরাতে জেফারসনের বাড়ির দরজা খোলা দেখে কেউ ভেতরে প্রবেশ করেছে আশঙ্কায় প্রথমে নিজে খুঁজে দেখেন এবং কাউকে না পেয়ে ‘নন- এমার্জেন্সি’ নম্বরে সাহায্য চেয়ে ফোন দেন।
ওই সময় ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল তা প্রমাণে ফোর্ট ওর্থ পুলিশ ডিপার্টমেন্ট থেকে পুলিশের ‘বডি ক্যামেরা ফুটেজ’ প্রকাশ করেছে।
সেখানে দেখা যায়, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পুরো ঘটনা ঘটে গেছে। পুলিশ কর্মকর্তারা জেফারসনের বাড়ির চারপাশে তল্লাশি চালাচ্ছিল। তখনই তারা জানালার কাছে একজনকে দাঁড়ানো দেখতে পেয়ে তাকে হাত উঁচু করে আত্মসমর্পণ করতে বলে এবং জানালার কাচে গুলি করে। এ গুলিতেই জেফারসনের মৃত্যু হয়।
পুলিশের দাবি, পুলিশ ‘হুমকি হতে পারে ভেবেই’ অস্ত্র বের করেছিল এবং জেফারসনের শয়নকক্ষ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে।
যদিও ওই ভিডিও অবশ্যই ‘এডিট’ করা। তারপরও সেখানে কোথাও পুলিশকে নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিতে শোনা যায়নি। তাছাড়া, টেক্সাসে ১৮ বছরের বেশি যে কেউ বৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখতে পারেন।
তাই অ্যাটাতিয়ানা জেফারসনকে গুলি করার কোনো যুক্তি নেই। যদিও পুলিশ বলেছে, তারা জেফারসনকে জরুরি চিকিৎসা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন।
আর তদন্তের স্বার্থে ওই শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
এতসব কাণ্ডে হতভম্ব স্মিথ বলেন, “আমার শরীর কাঁপছে, আমি পাগল হয়ে গেছি, আমার খুব হতাশ লাগছে। আমার মনে হচ্ছে এর জন্য কিছুটা হলেও আমি দায়ী। যদি আমি পুলিশকে ফোন না করতাম তবে সে (জেফারসন) এখন জীবিত থাকত।”
এ ঘটনার মাত্র দুই সপ্তাহ আগে অফ ডিউটিতে থাকার সময় বোথান জেন নামে এক কৃষ্ণাঙ্গকে গুলি করে হত্যার অপরাধে ডালাস পুলিশের এক কর্মকর্তার কারাদণ্ডের শাস্তি হয়েছে।