তারা বলেন, সীমান্তবর্তী ‘আঈন ইসা’ বন্দিশিবিরের কাছে লড়াই চলছিল। ওই সুযোগে বন্দিরা শিবিরের প্রধান ফটকে হামলা চালিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
সিরিয়া সীমান্ত থেকে কুর্দিদের নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) কে হটিয়ে দিতে গত সপ্তাহ থেকে সিরিয়ায় ঢুকে সেনা অভিযান শুরু করেছে তুরস্ক।
জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, এক সপ্তাহেই ওই এলাকা থেকে প্রায় ১৩ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেলে পালিয়ে গেছে; যে সংখ্যা আরো বাড়বে।
তুরস্ক সরকার কুর্দিদের সন্ত্রাসী সংগঠন বলে বিবেচনা করে। অন্যদিকে, সিরিয়ায় আইএসর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র কুর্দিদের সমর্থন দিয়েছিল।
ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আঙ্কারা তুরস্ক সীমান্তজুড়ে সিরিয়ার ভেতর ৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গঠন করতে চাইছিল। তাদের দাবি ছিল, ‘নিরাপদ অঞ্চলে’ কোনো কুর্দি যোদ্ধা থাকতে পারবে না। ওই আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তুরস্ক সেনা অভিযানের ঘোষণা দেয়।
বিবিসি জানায়, তুরস্ক সরকার সীমান্তে নিরাপদ অঞ্চল গঠন করে তার দেশে থাকা ৩০ লাখের বেশি সিরীয় শরণার্থীকে সেখানে পুনর্বাসন করার পরিকল্পনা করেছে।
তুরস্কের অভিযানের ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়া সীমান্ত থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার করে নেন। যদিও তুরস্ক বাড়াবাড়ি করলে ফল ভোগ করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি।
আঈন ইসা ক্যাম্পে কী ঘটেছে:
আঈন ইসা ক্যাম্পে প্রায় ১২ হাজার বন্দি ছিল। যাদের মধ্যে আইএস সংশ্লিষ্ট প্রায় এক হাজার বিদেশি নারী ও শিশু রয়েছে।
ক্যাম্পটির কাছে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সেখানে ‘কোনো নিরাপত্তারক্ষী নেই’ বলে জানান কুর্দি কর্মকর্তারা। যার সুযোগে প্রায় ‘আটশ বন্দি’ পালিয়ে গেছে বলে দাবি তাদের।
যদিও সিরিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সংগঠন ‘দ্য অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ একশ’র মত বন্দি পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে। তবে তারা বলেছে, এখনো তাদের হাতে এ বিষয়ে পূর্ণ তথ্য এসে পৌঁছায়নি।
যারা পালিয়ে গেছে তারা এ যুদ্ধাবস্থার মধ্যে ঠিক কোথায় গেছে তা এখনো জানা যায়নি বলে জানায় বিবিসি।
তবে তুরস্কের অভিযানের ঘোষণার পর ক্ষুব্ধ কুর্দিরা সতর্ক করে বলেছিল, যদি তাই হয় তবে তাদের বন্দিশিবের থাকা হাজার হাজার আইএস সন্দেহভাজনদের কী হবে তার কোনো নিশ্চয়তা তারা দিতে পারবে না।
“বন্দিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব কে নেবে? তাদের আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তারা আসুক এবং একটি সমাধান খুঁজে বের করুক।
“তাদের অভিযানের ফলে আইএস যোদ্ধারা আবারও সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পাবে, এটাও মাথায় রাখবেন।”
এসডিএফ’র তথ্যানুযায়ী, তাদের সাতটি বন্দিশিবিরে ১২ হাজারের বেশি আইএস সদস্য আছে। যাদের মধ্যে অন্তত চার হাজার বিদেশি নাগরিক।”
যদিও তারা তাদের বন্দিশিবিরের সঠিক অবস্থান প্রকাশ করেনি। তবে সেগুলো তুরস্ক সীমান্তেই অবিস্থিত বলে ধারণা করা হয়।
সম্প্রতি কয়েকটি গাড়ি বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস। শনিবার তারা বলেছে, সিরিয়ায় তারা নুতন করে প্রচরণা শুরু করেছে এবং কুর্দি বন্দিশিবিরগুলোতে তাদের সদস্যদের আটকে রাখার প্রতিশোধ নিতেই ওই হামলা চালিয়েছে।
এদিকে তুরস্ক বলেছে, অভিযানের পর আইএস বন্দিদের খুঁজে পেলে তারাই তাদের সব দায়িত্ব নেবে।