জাপানের প্রধান দ্বীপ হনশুতে আঘাত হানা প্রবল এই টাইফুনে অন্তত ২৩ জনের মৃত্যু খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এছাড়াও প্রায় ১৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
ঝড়ে দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে রোববার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছিল।
জাপানের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ টাইফুন হাগিবিস প্রচুর মেঘ বয়ে নিয়ে উপকূলে উঠে আসায় ভারি বৃষ্টিপাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এখন বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ঝড় ও বন্যার সঙ্গে লড়াইরত মানুষদের উদ্ধারে রোববার প্রায় ২৭ হাজার সেনা, পুলিশ, কোস্টগার্ড এবং ফায়ার ফাইটারসহ অন্যান্য উদ্ধারকর্মীদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পাঠানো হয়েছে বলে সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানায় রয়টার্স।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রায় ত্রিশ লাখ মানুষ শনিবার থেকে বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে। প্রায় ষাট লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সাংবাদিকদের বলেন, “এটা একটি ভয়াবহ প্রাকৃতিক দূর্যোগ। ইতোমধ্যে কয়েক হাজার এসডিএফ সেনা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে। আমরা জনগণকে জন্য সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।”
তিনি রোববার একটি জরুরি বৈঠক ডেকে আলোচনার পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রীকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পাঠিয়েছেন বলেও জানায় রয়টার্র্স।
“বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, পানীয় জলের অভাব এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে যাওয়ার পরও আমরা যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধার কাজ শুরুর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি… আমরা জনগণকে ভূমিধস এবং অন্যান্য বিপর্যয় থেকে বাঁচতে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।”
টেলিভিশন ফুটেজে নাগানো প্রদেশে চিকুমা নদীর আশে-পাশে বাড়িঘর জলমগ্ন দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে চলছে।
প্রায় সোয়া চার লাখ বাড়িঘর অন্ধকারে ডুবে আছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুরোপুরি সচল হতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লেগে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে কর্মকর্তারা।
রোববার ভোরের আগে টাইফুনটি জাপানের উত্তরপূর্ব উপকূলের দিকে সরে যায় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রোববার সন্ধ্যায় টাইফুন হাগিবিস ফের সাগরের উপর দিয়ে জাপানের উত্তরাঞ্চলীয় দ্বীপ হোক্কাইডোর দিকে এগিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফিলিপিন্সের তাগালোগ ভাষার শব্দ ‘হাগিবিস’ মানে ‘গতি’। এই হাগিবিস শনিবার সন্ধ্যায় হনশুর উপকূল দিয়ে স্থলে উঠে আসার কিছুক্ষণ পর টোকিওতে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয় বলে জানিয়েছে রয়টার্স।