উইঘুর নিপীড়ন: যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকায় চীনের ২৮ প্রতিষ্ঠান

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের অভিযোগে দেশটির সরকারি-বেসরকারি ২৮টি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2019, 04:45 AM
Updated : 8 Oct 2019, 04:45 AM

এ তালিকাভুক্তির ফলে চীনের ওই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন থেকে ওয়াশিংটনের অনুমোদন ছাড়া কোনো মার্কিন কোম্পানির পণ্য কিনতে পারবে না।

সোমবার মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

তাদের নথিতে কালো তালিকায় নেওয়া এ প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলো ‘মানবাধিকার লংঘন ও নিপীড়নে জড়িত’ বলে দাবি করা হয়েছে।

“এ ২৮টি প্রতিষ্ঠান চীনের দমন অভিযান, নির্বিচারে আটক এবং উইঘুর, কাজাখসহ দেশটির অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নজরদারিতে জড়িত,” বলেছে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জিনজিয়াং প্রদেশের জননিরাপত্তা ব্যুরোসহ মোট২০টি সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে। হিকভিশন, দাহুয়া টেকনোলজি, মেগভিল টেকনোলজিসহ বাকি ৮টি প্রতিষ্ঠানের সবগুলোই ফেসিয়াল-রিকগনিশন প্রযুক্তিতে বিশ্বসেরা।

এর মধ্যে হিকভিশন বিশ্বের অন্যতম বড় নজরদারি সরঞ্জাম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় চীন এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। 

জিনজিয়াংয়ের বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে বেইজিং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উইঘুরদের ওপর তীব্র নিপীড়ন চালাচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে। বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে প্রায় ১০ লাখ মুসলমানের ওপর বেইজিংয়ের নিপীড়ন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থাও।

চীন শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে ওঠা এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তারা বলছে, আটক কেন্দ্র নয় ওই ‘স্বেচ্ছা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো’ করা হয়েছে উগ্রবাদ মোকাবেলায়।

তিব্বতের মতো জিনজিয়াংও স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ। এখানকার অধিবাসীদের ৪৫ শতাংশই উইঘুর সম্প্রদায়ের, নৃতাত্ত্বিকভাবে যারা তার্কিশ মুসলিম। প্রদেশটির ৪০ শতাংশ অধিবাসী হান।

জুলাইয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে ২০টিরও বেশি দেশ উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর চীনের নিপীড়নের সমালোচনা করে লেখা একটি যৌথ চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিল।

“চীন চায় তার নাগরিকরা যেন সরকারের আরাধনা করে, ঈশ্বরের নয়,” গত সপ্তাহে ভ্যাটিকানে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই বলেছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেও।

যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য এবারই প্রথম চীনের কোনো প্রতিষ্ঠানের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়নি, চলতি বছরের মে মাসে ওয়াশিংটন চীনা টেলিকম জায়ান্ট হুয়াওয়েকেও কালো তালিকাভুক্ত করেছিল।