হংকংয়ে মুখোশ নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে

চার মাসের টানা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমাতে ঔপনিবেশিক যুগের জরুরি আইনের আওতায় হংকংয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশে মুখোশ পরা নিষিদ্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ জোরাল হচ্ছে।

>>রয়টার্স
Published : 7 Oct 2019, 11:39 AM
Updated : 7 Oct 2019, 11:39 AM

রোববারের পর সোমবারও বিক্ষোভ দেখিয়েছে শত শত বিক্ষোভকারী। তারা এদিন একটি শপিং মলে জড়ো হয়ে স্বাধীনতার দাবিতে স্লোগান দিয়েছে। শপিং মলের ভেতরে বৃত্তাকারে সমবেত হয়ে বিক্ষোভকারীরা ‘হংকং পুলিশ বাহিনী ভেঙে দাও,’ ‘স্বাধীনতার জন্য লড়ো,’ ‘আমার মুখোশ পরার অধিকার আছে’, বলে স্লোগান দেয়।

এর আগে রোববার বিক্ষোভকারীরা মুখোশের ওপর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মুখোশ পরেই হংকংয়ের কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভ করেছে। পুলিশ কয়েক জাগায় টিয়ার গ্যাস ছুড়লেও তা উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ হয়েছে। বৃষ্টিও উপেক্ষা করে বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ চালিয়ে গেছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হঠাতে জলকামানও ব্যবহার করেছে।

বিক্ষোভকারীদের মুখ থেকে মুখোশ হটিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন মানুষ আহতও হয়েছে। পেট্রোল বোমায় মুখে আঘাত পাওয়া এক সাংবাদিককে রোববার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মুখের কিছু অংশ পুড়ে গেছে এবং মাথায় ও ঘাড়েও আগুনের আঁচ লেগেছে।

হংকংয়ের নেতা ক্যারি লাম গত শুক্রবার মুখোশ নিষিদ্ধের ঘোষণা দেওয়ার পরই এর প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় একটি ছোটখাটো বিক্ষোভ হয়েছিল। শনিবার সে বিক্ষোভে সামিল হয় আরো বেশি মানুষ। রোববার তা আরো বড় আকার ধারণ করেছে এবং এখনো বিক্ষোভ থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

মুখোশ বিরোধী আইনে ক্ষোভ বাড়ছে। আরো অনেক মানুষ এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামবে বলে মনে করা হচ্ছে।

হংকং পুলিশের ভাষ্য, বিক্ষোভকারীরা বেআইনিভাবে সমাবেশে যোগ দিচ্ছে, প্রধান প্রধান সড়ক বন্ধ করে দিচ্ছে। হংকংয়ের নেতা লামও আর কোনো সহিংসতা না হতে দেওয়ার অঙ্গীকার করে বলেছেন, আমরা আর দাঙ্গা-বিক্ষোভকারীদেরকে আমাদের প্রিয় হংকংকে ধ্বংস করতে দিতে পারি না।

হংকংয়ের জননিরাপত্তাকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া বিক্ষোভকারীদের ‘চরম সহিংসতা’র প্রেক্ষাপটেই মুখোশ বিরোধী আইন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। নতুন আইনের আওতায় মুখ ঢেকে রাখার জন্য বিক্ষোভকারীদের একবছরের জেল হতে পারে।

হংকংয়ে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাস থেকে বাঁচতে এবং তাদের যেন শনাক্ত করা না যায়, এজন্য প্রায়ই মুখোশ পরে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন,  নতুন আইনটি খুবই বিতর্কিত এবং এটি কার্যকর করাও কঠিন হবে। তাছাড়া, হংকংয়ে বিক্ষোভের বিরুদ্ধে এটিই সম্ভবত প্রথম এমন কড়া পদক্ষেপ বলে সতর্ক করেছেন সমালোচকরাও।

চীনের মূলভূখণ্ডে বন্দি প্রত্যর্পণ নিয়ে একটি প্রস্তাবিত বিল বাতিলের দাবিতে গত জুন মাসে হংকংয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছিল।

টানা আন্দোলনের মুখে ওই বিল প্রথমে ‘মৃত’ এবং পরে বাতিল ঘোষণা করা হলেও আন্দোলন থামেনি। বরং গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীরা এখন হংকংয়ের চীনপন্থি সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে।