ইরাকে বিক্ষোভ চলছেই, নতুন নির্বাচনের দাবি শিয়া নেতা সদরের

চাকরির সংকট, নিম্নমানের পরিষেবা ও সরকারি কর্মকর্তাদের সীমাহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে ইরাকে জনসাধারণের টানা কয়েকদিনের বিক্ষোভ-সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ৭২-এ পৌঁছেছে বলে দেশটির নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2019, 08:26 AM
Updated : 5 Oct 2019, 08:35 AM

ক্ষোভ প্রশমনে সরকারের ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা করে প্রভাবশালী শিয়া নেতা মোকতাদা আল সদর পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের দাবি তুলেছেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

সরকার সব ইরাকির প্রয়োজন মেটানোর উপযুক্ত কোনো কর্মসূচি হাতে না নেয়া পর্যন্ত অনুসারী সাংসদদের পার্লামেন্ট বয়কটেরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সদরের এ অবস্থান ইরাকজুড়ে বিক্ষোভের ধার আরও বাড়িয়ে তুলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

“ইরাকিদের রক্তের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে সরকারের পদত্যাগ ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দেখভালে নতুন নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত,” বিবৃতিতে বলেছে প্রভাবশালী এ শিয়া নেতার কার্যালয়।

তিনদিনের বিক্ষোভ সহিংসতায় ১৯০ জনের বেশি আহত হওয়ার পর শুক্রবার ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি আন্দোলনকারীদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এদিন তিনি বাগদাদের কারফিউ তুলে নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। 

গত সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ সহিংসতায় শুক্রবারই বেশি হতাহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।

ইরাকের সামরিক বাহিনী এদিন ‘অজ্ঞাত স্নাইপারদের’ গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে।

বাগদাদে পুলিশের সঙ্গে সহিংসতার পর মাথায় গুলিবিদ্ধ এক বিক্ষোভকারীকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেছেন রয়টার্সের এক প্রতিবেদক। চিকিৎসকরা পরে ওই বিক্ষোভকারীকে মৃত ঘোষণা করেন।

রয়টার্সের এক টেলিভিশন ক্রুও ঘাড়ে স্নাইপারের গুলিতে আহত এক বিক্ষোভকারীকে দেখেছেন। শুক্রবার রাতেও বাগদাদের অনেক এলাকায় গুলির শব্দ পাওয়া গেছে।

এদিন দক্ষিণের শহর দিওয়ানিয়ায় প্রাদেশিক সরকারের সদরদপ্তরে হানা দেয়া বিক্ষোভকারীদের দিকে পুলিশ গুলি ছুড়লে তিনজন নিহত হয়।

বিক্ষোভকারীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়েছেন ইরাকের শিয়াদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত আয়াতুল্লাহ সাইয়িদ আলি হুসাইনি সিস্তানি।

“যা ঘটছে, তার জন্য পার্লামেন্টই সবচেয়ে বেশি দায়ী,” বলেছেন তিনি।

ইরাকের পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ আল হালবুসি জনসাধারণের এ বিক্ষোভকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিপ্লব’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন।

বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তিনি ইরাকি তরুণদের জ্বালানি খাতে চলমান বিদেশি প্রকল্পগুলোতে আকর্ষণীয় চাকরি ও দরিদ্রদের জন্য গৃহায়ন প্রকল্প নেওয়াসহ বেশকিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপের প্রস্তাব দিয়েছেন।