এবার চীনের প্রতি বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান ট্রাম্পের

গোপন ফোনালাপে বিদেশি সরকারকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি তদন্তের জন্য চাপ দিয়ে পার্লামেন্টারি শুনানির মুখে পড়া ডনাল্ড ট্রাম্প অভিশংসনের ঝুঁকির তোয়াক্কা না করেই এবার সবার সামনে চীন সরকারের প্রতি একই আহ্বান জানান।

>>রয়টার্স
Published : 4 Oct 2019, 06:10 AM
Updated : 4 Oct 2019, 06:12 AM

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের লনে সংবাদিকদের তিনি বলেন, “চীনের উচিত জো বাইডেনকে নিয়ে তদন্ত শুরু করা।”

সম্প্রতি এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপের তথ্য ফাঁস করেন।

গত ২৫ জুলাইয়ের ওই ফোনালাপে ট্রাম্প ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনৈতিক সুবিধা চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ তার।

ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন,  ট্রাম্প সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তার ছেলে হান্টারের বিরুদ্ধে উঠা একটি দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে ইউক্রেইন সরকারকে চাপ দিয়েছেন। কথা মত কাজ না করলে ট্রাম্প এমনকি দেশটিকে দেওয়া মার্কিন সামরিক সহায়তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার হুমকিও দেন।

বৃহস্পতিবার এটা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, “দেখুন, আমার মনে হয় যদি তারা এ বিষয় সৎ হয়ে থাকেন তবে তারা বাইডেনের বিরুদ্ধে বিস্তৃত তদন্ত শুরু করবেন। এটা খুবই সহজ উত্তর।

“তাদের উচিত বাইডেন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে তদন্ত করা। একই ভাবে চীনেরও বাইডেন পিতা-পুত্রের বিরুদ্ধে তদন্ত করা উচিত। কারণ, ইউক্রেইনের সঙ্গে যা ঘটেছে তারও চেয়েও বড় ঘটনা চীনের সঙ্গে ঘটেছে।”

ট্রাম্পের অভিযোগ, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেমোক্রেটিক নেতা জো বাইডেন এবং তার ছেলে হান্টার ইউক্রেইন ও চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক ও ব্যবসা সংক্রান্ত চুক্তি করার সময় দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন।

যদিও ট্রাম্প তার দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত দেখাতে পারেননি।

২০১৪ সালে হান্টার বাইডেন ইউক্রেইনের প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি ‘বুরিসমা’ তে যোগ দেন। ওই সময়ই বাবা-ছেলের সম্ভাব্য স্বার্থের সংঘাত হওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছিল।

তারপর ইউক্রেইনে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয় এবং রাশিয়াপন্থি প্রেসিডেন্টকে জোর করে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করা হয়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বরাক ওবামা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জো বাইডেনই সেখানে মূলভূমিকায় ছিলেন।

২০১৬ সালে জো বাইডেন ইউক্রেইন সরকারকে তাদের শীর্ষ প্রসিকিউটর ভিক্টোর শোকিনকে বরখাস্ত করতে বাধ্য করেন।

শোকিনের বাহিনীই ‘বুরিসমা’ গ্যাস কোম্পানির মালিকের বাণিজ্যিক নথিপত্র যাচাই-বাছাই করছিল।

ট্রাম্প ও তার মিত্রদের অভিযোগে, বাইডেন আসলে তার ছেলেকে রক্ষা করতে এ কাজ করেছেন। ইউক্রেইন সরকার ও অন্যান্য পশ্চিমা কর্মকর্তা এবং বড় বিনিয়োগকারীরাও ওই সময় শোকিনকে সরিয়ে দিতে চাইছিলেন। কারণ দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চালানোর কারণে শোকিন তখন সবার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।

যদিও গত সপ্তাহে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শোকিনের উত্তরসূরি বলেন, জো বাইডেন বা হান্টারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ নেই।

তবে ট্রাম্প বলছেন, শুধু ইউক্রেইন নয় বরং বাইডেন আরো দেশের সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করেছেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গের চীনের ‘ভারসাম্যহীন’ বাণিজ্য চুক্তির দায়ও বাইডেনের বলে মনে করেন তিনি।

ট্রাম্প বলেন, “তারা (চীন) বাইডেনের মত লোকের সঙ্গে চুক্তি করে এবং ছেলেকে ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার ধরিয়ে দেয়। হয়তো ওই কারণেই চীন অনেক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিজেদের সুবিধা মত বাণিজ্য চুক্তি করতে পেরেছে। তারা আমাদের দেশের সঙ্গে প্রতারণা করছে।”