সৌদিতে হামলা: যুবরাজ মোহাম্মদের সমালোচনার পালে হওয়া

যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্ব নিয়ে সৌদি আরবের রাজপরিবারের অনেক সদস্য ও অভিজাত ব্যবসায়ীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Oct 2019, 06:42 AM
Updated : 3 Oct 2019, 06:42 AM

বিশেষ করে সৌদি আরবের তেল শিল্পের প্রাণকেন্দ্রে গত মাসের নজিরবিহীন হামলার পর দেশটির প্রতিরক্ষায় যুবরাজের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

রাজপরিবার ও অভিজাত ব্যবসায়ীমহলের ঘনিষ্ঠ পাঁচটি সূত্র এবং জ্যেষ্ঠ বিদেশি কূটনীতিকরা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এসব কথা জানিয়েছেন বলে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রপ্তানিকারক দেশটির শাসক পরিবার আল সৌদের প্রভাবশালী শাখাগুলোতেও যুবরাজকে নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। বর্তমানে দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাবান এই পরিবারটির সদস্য সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার জন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

অভিজাত মহলের যে চক্রগুলো মোহাম্মদ ক্ষমতার রাশ খুব শক্ত হাতে ধরার চেষ্টা করছেন বলে মনে করেন তেল শিল্পে হামলা তাদের মধ্যে যুবরাজকে নিয়ে অসন্তোষ বাড়িয়েছে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।

ইরানের বিরুদ্ধে মোহাম্মদের তুলনামূলক কঠোর অবস্থানের সমর্থক অনেকেই তেল শিল্পে ওই আঘাতের পর সৌদি বাদশার ‘প্রিয়পুত্রের’ সমালোচনায় মেতেছেন, বলছেন তারা।

“ক্রাউন প্রিন্সের নেতৃত্ব নিয়ে অনেক অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। কীভাবে তারা আক্রমণ শণাক্তে ব্যর্থ হল?,” বলেছেন রাজপরিবার সংশ্লিষ্ট সৌদি অভিজাতদের একজন।

তিনি জানিয়েছেন, অভিজাত মহলের অনেকেই যুবরাজের ওপর ‘আস্থা নেই’ বলে জানিয়েছেন। বিদেশি কূটনীতিক এবং রাজপরিবার সংশ্লিষ্ট অন্য চারটি সূত্রের ভাষ্যেও একই ধরনের সুরই প্রতিধ্বনিত হয়েছে।

সমালোচকরা বলছেন, ইরানের বিপক্ষে যুদ্ধংদেহী অবস্থান এবং ইয়েমেনের যুদ্ধে জড়ানোর মধ্য দিয়েই যুবরাজ মোহাম্মদ সৌদি আরবকে হামলার মুখে ফেলেছেন। নিজের ক্ষমতা সুসংহত করতে অভিজ্ঞদের সরিয়ে নিজের অনুগত তুলনামূলক অনভিজ্ঞদের বসানোর কারণেও এ ধরনের বিপদ সৃষ্টি হচ্ছে বলেও মত রাজপরিবারের অনেক সদস্যের।

বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা বসানো হয়েছে, তার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

তবে ইয়েমেনের যুদ্ধ এবং গত বছর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশুগজিকে হত্যার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী মোহাম্মদের একটি নেতিবাচক ভাবমূর্তি দাঁড়ানোর পরও দেশে তার কট্টর সমর্থকের সংখ্যা কম নয় বলে জানিয়েছেন পর্যবেক্ষকরা। 

বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এতদিন ধরে চলমান নানান বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া, তেলনির্ভর অর্থনীতির দিক বদলে বৈচিত্র আনার চেষ্টার কারণে তরুণ সমাজের কাছেও ৩৪ বছর বয়সী এ নেতার গ্রহণযোগ্যতা অপরিসীম বলে জানিয়েছেন তারা।

তেল শিল্পক্ষেত্রে হামলার ঘটনা দেশে সমালোচনার মাত্রা ও পরিমাণ বাড়ালেও তা নিয়ে তার দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলেও মন্তব্য তাদের।