পাকিস্তানি কাশ্মীরে পুঞ্জিভূত হচ্ছে ক্ষোভ, বাড়ছে অস্থিরতা

ভারত শাসিত কাশ্মীর পরিস্থিতি বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের একের পর এক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মধ্যেই পাক-কাশ্মীরে দানা বেঁধে উঠছে ক্ষোভ আর বাড়ছে অস্থিরতা।

>>রয়টার্স
Published : 26 Sept 2019, 04:37 PM
Updated : 26 Sept 2019, 04:46 PM

এতে ঝুঁকির মুখে পড়েছেন ইমরান খান। কারণ, পাক-কাশ্মীরিদের ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে তা ভারতের সঙ্গে সংঘাতের পর্যায়ে চলে যেতে পারে।

পাকিস্তানের অংশের কাশ্মীরের কিছু মানুষ এরই মধ্যে বলেছেন, হাজার হাজার মানুষ সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) ভাঙার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স নিরপেক্ষ সূত্রে এ দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

তবে এটি স্পষ্ট যে, গত ৫ অগাস্টে ভারত সরকার জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্ত্বশাসন কেড়ে নেওয়া, কাশ্মীর অঞ্চলে গণহারে ধরপাকড়, যোগাযোগ বন্ধ করে রাখা এবং কারফিউ জারি করে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা নেওয়ার পর থেকেই এ অঞ্চলে উত্তেজনা বেড়ে গেছে।

কাশ্মীর ইস্যু বিশ্বের সামনে তুলে ধরা এবং এ ইস্যুতে কিছু করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাগাদা দিতে শুক্রবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে ইমরান খানের।

কিন্তু পাকিস্তানি কাশ্মীরের মানুষেরা যেন আর ধৈর্য্য রাখতে পারছে না। আজাদ কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে কোটলি জেলার রাজনৈতিক দল জামাত-ই-ইসলামির প্রেসিডেন্ট হাবীবুর রহমান আফাকির কথাতেই সে আভাস পাওয়া গেছে।

তিনি বলেছেন, “আমরা সবাই জাতিসংঘ অধিবেশনের জন্য অপেক্ষা করে আছি... দেখতে চাই বিশ্ব আমাদের সাহায্য করে কিনা। না করলে আমরা এলওসি (লাইন অব কন্ট্রোল) ভাঙার চেষ্টা নেব।”

পুরো অঞ্চলজুড়ে লাখো মানুষ স্যোশাল মিডিয়া আর মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়া কথা থেকে সংগঠিত হয়ে উঠছে বলে জানান আফাকি। তিনি বলেন, “আমরা মানুষকে ভাবাবেগ দিয়ে, একত্রিত করে প্রস্তুত করে তুলছি। ২৭ সেপ্টেম্বরে লড়াইয়ের জন্য আমরা তৈরি থাকব।”

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরবাদে কাশ্মীরিদের জড়ো হতে দেখা যায়নি। নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরেই মুজাফফরবাদের অবস্থান। ওই অঞ্চলের রাজনৈতিক নেতারা বলেছেন, তারা ইমরান খানের ভাষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারত সরকারের জম্মু-কাশ্মীর সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে এ পদক্ষেপের জেরে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কসহ অন্যান্য যোগাযোগ ছিন্ন করলেও পাক-কাশ্মীরিদের নিয়ন্ত্রণ রেখা ভাঙার পরিকল্পনার নিন্দা করেছেন।

এ মাসে এক ভাষণে তিনি বলেছেন, কেউ সীমান্ত পেরোনোর চেষ্টা করলে সে ভারতের রোষে পড়বে, আন্তর্জাতিক সহমর্মিতাও হারাবে এবং কাশ্মীরেরও শত্রুতে পরিণত হবে।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীও বলেছে, তারা কাউকে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরোতে দেবে না। কাশ্মীরিদেরকে কষ্টকর অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে বিশ্ববিবেককে জাগ্রত করার জন্য পাকিস্তান সর্বোতভাবে শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিক চেষ্টাই চালাচ্ছে বলে এক ইমেইলে জানিয়েছে সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা।