ব্রিটিশ পার্লামেন্ট স্থগিত বেআইনি: সুপ্রিম কোর্ট

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পার্লামেন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্তকে বেআইনি ঘোষণা করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2019, 10:06 AM
Updated : 24 Sept 2019, 01:46 PM

আদালত বলেছে, পার্লামেন্ট স্থগিতে রানিকে প্রধানমন্ত্রী জনসনের অনুরোধ আইনসম্মত ছিল না।

যুক্তরাজ্যের সর্বোচ্চ আদালতের ১১ বিচারপতির সর্বসম্মত এই রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলছে আন্তর্জাতিক সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন।

গত ১০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট পরবর্তী পাঁচ সপ্তাহের জন্য মুলতবি ঘোষণা করা হয়। এর পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছিলেন, আগামী ১৪ অক্টোবর পার্লামেন্টে রানির ভাষণ সামনে রেখে তিনি যাতে তার সরকারের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারেন সেইজন্য পার্লামেন্ট স্থগিত চেয়েছেন।

তবে সমালোচকদের মতে, পার্লামেন্ট সদস্যরা যাতে তার ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলতে না পারেন সেজন্য তাদের পাশ কাটাতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন জনসন।

আদালতের এই রায়ের পর প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন একদল এমপি। যত দ্রুত সম্ভব পার্লামেন্ট অধিবেশন চেয়েছেন তারা।  

প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, এই রায়ে জনসনের ‘গণতন্ত্রের প্রতি অবমাননা’ প্রকাশিত হয়েছে।

রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, আগামী ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকরের সময়সীমা সামনে রেখে পার্লামেন্টের দায়িত্ব পালন বন্ধ করাটা ভুল ছিল।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন; ছবি-রয়টার্স

দেশের গণতন্ত্রের মৌলিক বিষয়গুলোর উপর এর প্রভাব ‘ভয়াবহ’ বলে অভিমত দেন কোর্টের প্রেসিডেন্ট লেডি হেল।

তিনি বলেন, রানিকে পার্লামেন্ট স্থগিতের অনুরোধের সিদ্ধান্ত আইনসম্মত ছিল না। কারণ এর প্রভাব ছিল হতাশাজনক। এর মধ্য দিয়ে যৌক্তিক কারণ ছাড়াই পার্লামেন্টের সাংবিধানিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রদ করা হয়েছে।

কোর্ট প্রেসিডেন্ট বলেন, বিচারপতিদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হল, পার্লামেন্ট স্থগিত হয়নি- এই সিদ্ধান্ত বাতিল এবং এর কোনো কার্যকারিতা নেই। পরবর্তীতে কী হবে সে সিদ্ধান্তের ভার হাউজ অব কমন্স এবং হাউজ অব লর্ডসের স্পিকারদের।

আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে হাউজ অব কমন্সের স্পিকার জন বেরকাউ বলেছেন, আর কোনো দেরি না করে পার্লামেন্ট বসবে। জরুরি ভিত্তিতে দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি।

ব্রেক্সিট প্রশ্নে এমপিদের একজোট করতে ব্যর্থ হয়ে টেরিজা মে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ালে জুলাইয়ের শেষ ভাগে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হন তার দলের নেতা বরিস জনসন।

যুক্তরাজ্যে নতুন সরকার গঠনের পর নিয়মিতই পার্লামেন্ট অধিবেশন স্থগিত করা হয়। ওই সময়ে নতুন সরকারের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে রানি কবে ভাষণ দেবেন তা ঠিক করা হয়।

ব্রেক্সিট নিয়ে মতবিরোধের মধ্যে বরিস জনসনের পার্লামেন্ট স্থগিতের সুযোগ নেওয়ার বিরোধিতায় সোচ্চার ছিলেন এমপিরা। পার্লামেন্ট মুলতবির ঘোষণা এলে হাউজ অব কমন্সে ‘শেইম অন ইউ’ বলে চিৎকার করেন কয়েকজন এমপি, ‘সাইলেন্সড’ লেখা কাগজ হাতে নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তারা।