জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে নেতারাই আমাদের ব্যর্থ করছেন: থানবার্গ

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ব্যর্থতার জন্য তীব্র ভাষায় বিশ্ব নেতাদের নিন্দা করেছেন সুইডেনের কিশোরী জলবায়ু আন্দোলনকারী গ্রেটা থানবার্গ । 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2019, 08:11 AM
Updated : 24 Sept 2019, 08:30 AM

সোমবার নিউ ইয়র্কে একদিনব্যাপী জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে প্রায় ৬০ জন বিশ্ব নেতার উপস্থিতিতে আবেগময় উত্তেজিত কণ্ঠে নিজের বক্তব্য পেশ করেন ১৬ বছর বয়সী এ কিশোরী।

এভাবে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ডাকা জলবায়ু সম্মেলন শুরুর সুরটি তীব্রতায় বেঁধে দেন সাগরপারি দিয়ে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে উপস্থিত হওয়া কিশোরিটি, জানিয়েছে বিবিসি, বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

থানবার্গ বলেন, “এই সবকিছুই ভুল। আমার এখানে থাকা উচিত নয়। মহাসাগরের অপরপারে স্কুলে ফিরে যাওয়া উচিত আমার, অথচ আমাদের ছোটদের কাছে আশা নিতে এসেছেন আপনারা সবাই। কী সাহস আপনাদের?

“আপনারা আপনাদের ফাঁকা বুলি দিয়ে আমার স্বপ্ন ও আমার শিশুকাল ছিনিয়ে নিয়েছেন,” বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন তিনি।  

জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আর্জি জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা আপনাদের ওপর নজর রাখবো।”

নিজের বক্তব্যে মহাসচিব গুতেরেস বলেন, বিশ্ব ‘গভীর জলবায়ুর গর্তে’ আছে এবং জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

“সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এখনও অনেক দেরি হয়ে যায়নি,” বলেছেন তিনি।

যে দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সম্মেলনে যোগ দিয়েছে শুধু তাদেরই কথা বলার সুযোগ দেওয়া হবে বলে আগেই তিনি জানিয়ে রেখেছিলেন তিনি।

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সন্দেহ পোষণকারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সম্মেলনটিতে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল না, কিন্তু এক পর্যায়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে নিয়ে তিনি সেখানে হাজির হন। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য শুনে তারপর সেখান থেকে চলে যান তিনি। 

মের্কেল জানান, বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবিলায় তার দেশ তাদের আর্থিক প্রতিশ্রুতি দ্বিগুণ করে চার বিলিয়ন ইউরো করবে।

চিরহরিৎ বনগুলো রক্ষায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ৫০ কোটি ডলার ছাড় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানান।

নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা অ’ডুর্ন জানিয়েছেন, তার দেশে ‘পরিবর্তন শুরু হয়ে গেছে’।

“আমাদের গড় নিঃসরণ ২০০৬ সালে সর্বোচ্চ মাত্রায় উঠেছিল, আমাদের ৮০ শতাংশেরও বেশি বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য পানি ও বায়ু শক্তি থেকে আসছে, আর আমরা একটি উচ্চাভিলাষী এজেন্ডা শুরু করেছি।

“আমরা পার্লামেন্টে জিরো কার্বন প্রস্তাব তুলেছি, এর উদ্দেশ্য নিউ জিল্যান্ডকে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সীমা ১.৫ সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা। আমাদের প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্রতিবেশীদের আবহাওয়াজনিত ধ্বংসাত্মক প্রাকৃতি দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য এটা করা প্রয়োজন,”  বলেন তিনি।

এই সম্মেলনের আগে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আগে যা ভাবা হয়েছিল তার চেয়েও দ্রুতগতিতে বিশ্ব উষ্ণ হয়ে উঠছে এবং এর লক্ষণ ও প্রভাবও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।