ইসরায়েলের নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই

ইসরায়েলে পাঁচ মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় সাধারণ নির্বাচনেও প্রধান দুই দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের চিত্র মিলেছে বলে দেশটির গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2019, 09:35 AM
Updated : 18 Sept 2019, 09:35 AM

অনানুষ্ঠানিক ফলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ডানপন্থি লিকুদ পার্টি ও বেনি গান্টজের মধ্যপন্থি ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি উভয়েই ৩২ টি করে আসন পেয়ে একে অপরের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে বলে স্থানীয় সম্প্রচারমাধ্যম কান জানিয়েছে।

যিনিই প্রধানমন্ত্রী হবেন, তার পক্ষে অবশ্যই পার্লামেন্টের ৬১ সদস্যদের সমর্থন থাকতে হবে। প্রধান দুই দলের মধ্যে সমঝোতা না হলে, তুলনামূলক ছোট দল ইসরায়েল বেইতিনু ক্ষমতার ভারসাম্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বুধবার সকাল পর্যন্ত ভোটের আনুষ্ঠানিক আংশিক ফলে লিকুদ পার্টিকে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় সামান্য এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দিন ধরে ক্ষমতায় থাকা ডানপন্থি লিকুদ পার্টির নেতানিয়াহু রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হলে দখলকৃত পশ্চিম তীরের নতুন নতুন এলাকায় ইহুদি বসতি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী এবং পশ্চিম তীর ও গাজাকে নিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখা ফিলিস্তিনিরা নেতানিয়াহুর এমন পদক্ষেপ শান্তি প্রক্রিয়ার সব ধরনের আশাকে নস্যাৎ করবে বলে সতর্কও করেছে।

মধ্যপন্থি গান্টজকে ইহুদি বসতি বিস্তৃতির পক্ষে থাকতে দেখা না গেলেও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ব্যাপারে তার অবস্থান স্পষ্ট নয়। তবে নেতানিয়াহুর মতো তিনিও জেরুজালেমের বিভক্তির বিপক্ষে। ইসরায়েল সমগ্র জেরুজালেমকেই তাদের রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করে।

বুধবার সকালে ইসরায়েল বেইতিনুর নেতা আভিগদর লিবারম্যান বলেছেন, লিকুদ ও ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টির মধ্যে সমঝোতায় কোনো সরকার হলেই কেবল তিনি তাতে সমর্থন দেবেন।

অন্যদিকে ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি জোট নিয়ে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বসতে আপত্তি জানিয়েছে।

বুধবার স্থানীয় সময় সকাল সোয়া ৯টা পর্যন্ত যে ৩০ শতাংশ ভোটের আনুষ্ঠানিক ফল জানা গেছে তাতে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে যথাক্রমে কট্টর রক্ষণশীল শাস পার্টি এবং ইসরায়েল বেইতিনুর অবস্থান ছিল।

সম্প্রচারমাধ্যম কান তাদের প্রতিবেদনে প্রাপ্ত ভোটের ৯৬ দশমিক ৯ শতাংশের ওপর ভিত্তি করে আসনভিত্তিক ওই অনানুষ্ঠানিক ফল জানিয়েছে, বলছে টাইমস অব ইসরায়েল।

তাদের হিসাবে লিকুদ ও ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি উভয়েই ৩২টি করে আসন পেয়েছে। ইসরায়েলি আরবরা পেয়েছে ১২টি, ইসরায়েল বেইতিনু ৯টি, কট্টর রক্ষণশীল দলগুলো মিলে পেয়েছে ১৭টি, ডানপন্থি ইয়ামিনা অ্যালায়েন্স পেয়েছে সাতটি, লেবার-গেষার ৬টি এবং মধ্য বামপন্থি ডেমোক্রেটিক ক্যাম্প ৫টি।

বুথফেরত জরিপেও একই ধরনের ফল মিলেছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি।

আনুষ্ঠানিক ফলেও এই চিত্র মিললে নেতানিয়াহু কিংবা গান্টজ কারো পক্ষেই ইসরায়েল বেইতিনুর সহায়তা ছাড়া সরকার গঠন সম্ভব হবে না, বলছেন পর্যবেক্ষকরা।

এর আগে এপ্রিলের নির্বাচনের পরও ইসরায়েল বেইতিনুর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে সরকার গঠনে ব্যর্থ হন নেতানিয়াহু। এবার তার জন্য পথ আরও জটিল।

ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি এবারের নির্বাচনের পর ইসরায়েল নতুন একজন প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে বলে 'সতর্ক আশাবাদ' ব্যক্ত করলেও বাম এবং মধ্যপন্থি দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধের কারণে তাদের পক্ষেও সরকার গঠন কষ্টসাধ্য হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।