তেল প্লান্টে হামলার পেছনে ‘ইরান থাকলেও’ যুদ্ধ চান না ট্রাম্প

সৌদি আরবের তেল প্লান্টে হামলার পেছনে ইরান আছে এমনটি মনে হলেও যুদ্ধে যেতে চান না বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2019, 06:22 AM
Updated : 17 Sept 2019, 06:31 AM

এ হামলার জেরে তেলের দাম চড়তে শুরু করেছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে নতুন আরেকটি লড়াই শুরু হওয়ার আশঙ্কা জোরালো হয়েছে, এ পরিস্থিতিতেই সোমবার এ মন্তব্য করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট; জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

শনিবারের ওই হামলায় বিশ্বের বৃহত্তম তেল শোধনাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এতে কয়েক দশকের মধ্যে অপরিশোধিত তেলের দামে সবচেয়ে বড় উল্লম্ফন ঘটে। 

গত বছর ট্রাম্প ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়ে তেহরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক কর্মসূচীর ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করলে যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে।

মধ্যপ্রাচ্যের ইরান সমর্থিত বাহিনীগুলোকে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করানোর জন্যও তেহরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চায় ওয়াশিংটন, এসব বাহিনীগুলোর মধ্যে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরাও আছে যাদের সঙ্গে সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনীগুলো চার বছর ধরে লড়াই করছে। 

সৌদি আরবের তেল প্লান্টে হামলার দায় হুতিরা স্বীকার করলেও এর পেছনে ইরান আছে বলে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের, এটি তদন্ত করেও দেখছে তারা। 

“এই মূহুর্তে নিশ্চিতভাবেই সেটি এমনই দেখাচ্ছে,” সৌদিতে হামলা নিয়ে নিজেদের দাবির পক্ষে বলেছেন ট্রাম্প; কিন্তু তারপরও সৌদি আরবের পক্ষ হয়ে তিনি লড়াইয়ে জড়াতে যাচ্ছেন না বলে পরিষ্কার করেছেন। 

“আমি এমন একজন মানুষ যে যুদ্ধ করতে চায় না,” বলেছেন ট্রাম্প। 

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং জ্বালানিমন্ত্রী রিক পেরিসহ দেশটির বেশ কয়েকজন মন্ত্রী হামলার জন্য তেহরানকে দায়ী করেছেন। পম্পেও ও অন্যরা শিগগিরিই সৌদি আরব সফর করবেন বলে জানিয়েছে ট্রাম্প। 

তেল প্লান্টে হামলার ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা ‘হামলার জন্য প্রস্তুত আছে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প, কিন্তু এর একদিন পর সোমবার তিনি জানান, তেমনটি করার ‘কোনো তাড়া নেই’।

“আমাদের অনেক বিকল্প আছে, কিন্তু এই মূহুর্তে আমি বিকল্প খুঁজছি না। এটি কে করেছে তা নিশ্চিতভাবে বের করতে চাই আমরা,” বলেছেন তিনি।

সৌদিদের রক্ষা করার কোনো প্রতিশ্রুতি তিনি দেননি বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।

“না, আমি সৌদিদের এ প্রতিশ্রুতি দেইনি। সৌদিদের সঙ্গে আমাদের বসতে হবে এবং করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

“এটি সৌদি আরবের ওপর হামলা, আমদের ওপর নয়। তবে আমরা নিশ্চিতভাবেই তাদের সাহায্য করবো,” বলেছেন তিনি। 

ওই হামলার কারণে সৌদির দৈনিক তেল উৎপাদন কমে অর্ধেকেরও নিচে নেমে গেছে। এতে বিশ্বের অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন পাঁচ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

সৌদির তেল উৎপাদন স্বাভাবিক পর্যায়ে আসতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে বলে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি সৌদি আরামকোর কার্যক্রম সম্পর্কে জ্ঞাত দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসতে কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে বলে এর আগে ধারণা দেওয়া হয়েছিল। 

কিছু সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলেও ক্রেতাদের চাহিদা মেটানোর মতো বিপুল মজুদ তাদের আছে বলে আশ্বস্ত করেছে সৌদি আরব।

সোমবার শিপ ট্র্যাকিংয়ের তথ্যে দেখা গেছে, তেলের কার্গো ভরার জন্য অন্তত ১১টি সুপারট্যাংকার সৌদির বন্দরগুলোতে অপেক্ষা করছে।