সৌদিতে হামলার পর তেলের বাজার চড়া

সৌদি আরবের দুটি তেল শিল্পক্ষেত্রে বড় ধরনের হামলার পর জ্বালানি তেলের বাজারদর চড়তে শুরু করেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2019, 07:54 AM
Updated : 16 Sept 2019, 07:54 AM

শনিবারের ওই ড্রোন হামলায় বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের সরবরাহ পাঁচ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা দায় স্বীকার করলেও যুক্তরাষ্ট্র ওই হামলার জন্য ইরানকে অভিযুক্ত করেছে। তেহরান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

পর্যবেক্ষকরা সৌদি আরবের তেল শিল্পক্ষেত্রে হামলার পর থেকেই জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন।

সোমবার ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম ১০ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬৬ দশমিক ২৮ ডলারে পৌঁছেছে; অন্যদিকে এশিয়ায় ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ব্যারেলপ্রতি তেল লেনদেন হয়েছে আগের চেয়ে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি দরে, ৫৯ দশমিক ৭৫ ডলারে।

শুরুর দিকে আরও চড়া থাকলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বাজারে মার্কিন মজুদ থেকে তেল ছাড়ার অনুমোদন দেয়ার পর দর খানিকটা নেমে আসে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

শনিবার সৌদি আরবের তেল শিল্পের একেবারে কেন্দ্রস্থলে ওই ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত প্ল্যান্টের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল শোধনাগারও আছে।

প্ল্যান্ট দুটির কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত লেগে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হামলার ফলে সৌদি আরামকোর দৈনিক তেল উৎপাদন ৫৭ লাখ ব্যারেল হ্রাস পাবে বলে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় এ তেল কোম্পানি জানিয়েছে।

সৌদি তেল শিল্পক্ষেত্রে হামলার ‘রাজনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবের’ প্রতিক্রিয়ায় বাজারে তেলের দাম বাড়ছে বলে ওয়ান্দা নামে একটি বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক জেফ্রি হ্যালি জানিয়েছেন।

“সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, সৌদি আরবের এসব স্থাপনা হামলার হাত থেকে কতটুকু নিরাপদ?” বলেছেন তিনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেও শনিবারের ওই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছেন। সৌদি আরবে হামলাগুলো ইয়েমেন থেকে হয়েছে, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি জানিয়ে তিনি তেহরানের কূটনৈতিক ‘ভানের’ও নিন্দা করেছেন।

ইরান এসব অভিযোগ অস্বীকার করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘ধোঁকাবাজি’র অভিযোগ এনেছে। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সব সেনাঘাঁটি ও বিমানবাহী রণতরী তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্রের নাগালে আছে বলে প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিয়েছে তারা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প পরে এক টুইটে বলেছেন, হামলায় কারা দায়ী যুক্তরাষ্ট্র তা জানে।

ওয়াশিংটন ‘হামলার জন্য প্রস্তুত’ থাকলেও সৌদি আরব কীভাবে অগ্রসর হতে চায় তা জানার অপেক্ষায় আছেন বলে ট্রাম্প জানিয়েছেন।

আরেকটি টুইটে ‘এখনও বিপুল পরিমাণ তেল (মজুত) আছে’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

দুটি প্ল্যান্টে হামলায় কেউ হতাহত হয়নি বলে নিশ্চিত করলেও হামলার বিষয়ে সৌদি আরবের দিক থেকে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী প্রিন্স আবদুলআজিজ বিন সালমান জানিয়েছেন, সৌদি আরবের যে বিপুল তেল মজুদ আছে তা থেকে উৎপাদনের ঘাটতি পুষিয়ে নেয়া হবে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরব প্রতিদিন ৭০ লাখেরও বেশি ব্যারেল তেল সরবরাহ করে। চলতি বছরের জুনে দেশটির মজুদ তেল ১৮ কোটি ৮০ লাখ ব্যারেলে পৌঁছেছিল বলে সরকারি তথ্যে জানা গেছে।