সেইসঙ্গে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে বলেছে, ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সব সেনাঘাঁটি ও বিমানবাহী রণতরী তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের নাগালের মধ্যেই আছে।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি ‘সৌদি আরামকো’র দুইটি তেলক্ষেত্রে শনিবার ভোরে ড্রোন হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
আবকাইক ও খুরাইস প্রদেশে অবস্থিত ওই দুইটি তেলক্ষেত্রের মধ্যে আবকাইক তেলক্ষেত্রে বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল শোধনাগার রয়েছে।
হামলার পর রোববার সকালে এক বিবৃতিতে সৌদি আরামকো জানায়, অগ্নিকাণ্ডে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে দেশের দৈনিক তেল উৎপাদন ৫৭ লাখ ব্যারেল হ্রাস পাবে।
যা বিশ্বের মোট তেল সরবরাহের পাঁচ শতাংশেরও বেশি।
সৌদি আরব বিশ্বের বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশ। দেশটি প্রতিদিন গড়ে ৭০ লাখ ব্যারেলেরও বেশি তেল রপ্তানি করে। এখন উৎপাদন ৫৭ লাখ ব্যারেল হ্রাস পাওয়ার অর্থাৎ দেশটির দৈনিক মোট তেল উৎপাদন ক্ষমতার অর্ধেকের বেশি সাময়িকভাবে পঙ্গু হয়ে গেল।
ইয়েমেনের ইরানঘনিষ্ঠ হুতি বিদ্রোহীরা ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এ আগেও হুতিরা বেশ কয়েকবার সৌদি তেলক্ষেত্রে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। কিন্তু এবারের হামলাই ছিল এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে বেপরোয়া হামলা।
হুতি বিদ্রোহীরা হামলার দায় স্বীকার করলেও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর দাবি, ইয়েমেন থেকে ওই হামলা হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই। বরং তিনি সরাসরি ইরানের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন।
জবাবে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক বিবৃতিতে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
দেশটির অভিজাত রেভল্যুশনারি গার্ডের এক জ্যেষ্ঠ কমান্ডার আরো কড়া ভাষায় এর জবাব দিয়ে বলেছেন, ইরান ‘পূর্ণমাত্রার’ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত আছে।
তাসনিম নিউজ এজেন্সিকে তিনি বলেন, “সবার জানা উচিত ইরানের চারপাশে যুক্তরাষ্ট্রের যতগুলো সেনাঘাঁটি ও বিমানবাহী রণতরী রয়েছে তার সবগুলোই আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের নাগালের মধ্যে।
কবে নাগাদ আবার পূর্ণমাত্রায় তেল উৎপাদন শুরু হবে সে বিষয়ে আরামকো থেকে রোববার কিছু জানানো হয়নি। তবে বলেছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তারা পরবর্তী অগ্রগতি সম্পর্কে জানাবে।
তেল উৎপাদ আগের অবস্থায় ফিরে আসতে ‘কয়েক দিন নয় বরং কয়েক সপ্তাহ’ লেগে যাবে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরামকো ঘনিষ্ঠ এক কর্মকতা।