হংকংয়ে লণ্ঠন জ্বালিয়ে পাহাড়ে মানববন্ধন

টানা কয়েক মাসের বিক্ষোভের পর হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীরা চীন নিয়ন্ত্রিত শহরটিতে আরও গণতন্ত্র চেয়ে লণ্ঠন ও মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় মানববন্ধন করেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Sept 2019, 07:41 AM
Updated : 14 Sept 2019, 10:53 AM

শুক্রবার রাতের এ মানববন্ধনের পর তারা এখন হংকংয়ের বিভিন্ন বিপণি বিতানে অবস্থান ধর্মঘটেরও পরিকল্পনা করছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

বেইজিংকে ১৯৮৪ সালে স্বাক্ষরিত সিনো-ব্রিটিশ যৌথ ঘোষণার প্রতি সম্মান দেখানোর দাবি জানাতে রোববার ব্রিটিশ কনসুলেটের বাইরে অবস্থান নেওয়ার কথাও ভাবছেন তারা।

সিনো-ব্রিটিশ ওই যৌথ ঘোষণা অনুযায়ীই ১৩ বছর পর ১৯৯৭ সালে হংকংকে চীনের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়।

রয়টার্স লিখেছে, মধ্য-বসন্ত উৎসবে গান ও স্লোগানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থিদের এ মানববন্ধন ছিল আগের সহিংস কর্মসূচিগুলোর একেবারেই বিপরীত। তিন মাস ধরে চলা সেসব বিক্ষোভে পুলিশকে প্রায়ই কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামান ছুড়তে দেখা গিয়েছিল।

বিক্ষোভকারীরা সেসময়ও বিভিন্ন বিপণি বিতানে জড়ো হতেন; মাঝে মাঝে তাদের সঙ্গে পতাকাবাহী চীনা সমর্থকদের হাতাহাতিও হয়েছে।

বিচারের জন্য হংকংয়ের বাসিন্দাদের চীনের মূল ভূখণ্ডে পাঠানোর সুযোগ রেখে আইন সংশোধনের একটি বিল নিয়ে জুনে বেইজিংঘনিষ্ঠ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূচনা হয়।

টানা আন্দোলনের মুখে প্রথমে বিতর্কিত ওই বিলটি ‘স্থগিত’ করে হংকং প্রশাসন; তাতেও কাজ না হলে পরে সেটি ‘পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেয়ার’ ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম।

বিক্ষোভকারীরা এখন শহরটিতে অধিক গণতন্ত্র, চীনের হস্তক্ষেপ কমানো ও আরও স্বায়ত্তশাসন দাবি করছেন।

হংকংয়ের কারণেই চীনকে ‘এক দেশ দুই ব্যবস্থার’ নীতি চালিয়ে যেতে হচ্ছে। হস্তান্তরের সময় যুক্তরাজ্য বেইজিংয়ের কাছ থেকে শহরটির জন্য পৃথক বিচারব্যবস্থাসহ বেশকিছু ক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসনের প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছিল।

গণতন্ত্রপন্থিদের দাবি, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেইজিং হংকংয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ আরও সুদৃঢ় করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।

রয়টার্স বলছে, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন ১ অক্টোবর তাদের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের আগেই হংকয়ের বিক্ষোভকে শান্ত করতে উদগ্রীব। দেশটি হংকংয়ের অস্থিরতার জন্য পশ্চিমা শক্তি বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যকে দায় দিচ্ছে।

এদিকে যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, চীন যেন ১৯৮৪ সালের যৌথ ঘোষণা মেনে চলে, তা নিশ্চিতে লন্ডনেরও দায়দায়িত্ব আছে বলে মনে করে তারা।

“ওই যৌথ ঘোষণা যুক্তরাজ্য ও চীনের মধ্যে আইনি চুক্তি, ৩০ বছর আগে স্বাক্ষরিত ও কার্যকর হওয়ার সময়ও সেটি যেমন বৈধ ছিল, আজও তা বৈধ। স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য সরকার এ অবস্থানে অটুট থাকবে,” জুনে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র এমনটাই বলেছিলেন।