কাশ্মীরে দমনাভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছে প্রায় ৪,০০০

ভারত শাসিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা গত মাসে প্রত্যাহার হওয়ার পর থেকে কর্তৃপক্ষ প্রায় ৪ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সরকারি এক পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে এ তথ্য।

>> Reutersবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Sept 2019, 02:22 PM
Updated : 12 Sept 2019, 02:22 PM

আর এ থেকেই কাশ্মীর অঞ্চলে ব্যাপক মাত্রায় বড় ধরনের দমনাভিযানের চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

ভারতের কেন্দ্র সরকার গত ৫ অগাস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করে রাজ্যটিকে কেন্দ্র শাসিত দুইটি আলাদা অঞ্চলে ভাগের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।

তারপর থেকেই অঞ্চলটিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে অধিবাসীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তানের সঙ্গেও বেড়েছে উত্তেজনা।

কাশ্মীরে যাতে বিক্ষোভ দানা বেঁধে উঠতে না পারে সেজন্য ভারত সরকার অঞ্চলটিকে নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে রেখেছে। অনেক এলাকাতেই বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে মোবাইল এবং ইন্টারনেট সংযোগ, বহাল আছে কারফিউয়ের মত কড়াকড়ি।

গত ৬ সেপ্টেম্বরের এক সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ পরিস্থিতির মধ্যে সেখানে গ্রেপ্তার হয়েছে ৩ হাজার ৮শ’রও বেশি মানুষ। যদিও প্রায় ২ হাজার ৬শ’ জনকে পরে মুক্তি দেওয়া হয়।

রয়টার্স প্রতিবেনটি হাতে পেয়েছে। তবে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ কেউই এ প্রতিবেদনের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।

মানুষজনকে কিসের ভিত্তিতে আটক করা হচ্ছে তা স্পষ্ট নয়। তবে এক ভারতীয় কর্মকর্তা বলেছেন, অনেককেই ‘পাবলিক সেফটি অ্যাক্ট’ এর আওতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের এ আইন অনুযায়ী, কোনো অভিযোগ ছাড়াই কাউকে ২ বছর পর্যন্ত আটকে রাখা যায়।

প্রকাশিত সরকারি প্রতিবেদনে এই প্রথম কাশ্মীর অঞ্চলে ব্যাপকহারে ধরপাকড়ের চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। সেইসঙ্গে কোথা থেকে কাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে আভাসও মিলেছে।

গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে আছেন, কাশ্মীরের দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও ২শ’র বেশি রাজনীতিবিদসহ বিচ্ছিন্নতাপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর ১শ’র বেশি নেতা-কর্মী। আর বাকি ৩ সহস্রাধিক মানুষের মধ্যে রয়েছে পাথর ছুড়ে মারা বিক্ষোভকারীরাসহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারি অন্যান্যরা। আটক ৮৫ জনকে গত রোববার ভারতের উত্তরাঞ্চলে আগ্রার একটি জেলে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ওই অঞ্চলের ইতিহাসে এমন দমনপীড়নের ঘটনা নজিরবিহীন। এ ধরপাকড়ের ফলে অঞ্চলটিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। উপরন্তু যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা, নিরাপত্তা কড়াকড়ি এবং রাজনৈতিক নেতাদেরকে আটকে রাখার ঘটনা পরিস্থিতিকে আরো খারাপের দিকে নিয়ে গেছে।