ট্রাম্প ২০১৫ সালের ইরান পরমাণু চুক্তি পরিহারের পর থেকেই ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করে আসছেন ইউরোপীয় নেতারা।
সে লক্ষ্যেই ওই চুক্তি বাঁচাতে ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় ইরানের বিষয়ে যৌথভাবে উদ্যোগ নিতে একমত হয়েছিলেন জি-৭ নেতারা। কিন্তু সে আশায় পানি ঢেলেছেন ট্রাম্প।
ইরানের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নে রোববার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, উত্তেজনা হ্রাসে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ চাইলে তেহরানের সঙ্গে কথা বলতেই পারেন। তিনি তার নিজের উদ্যোগ মতো চলবেন।
তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ হ্রাসে ২০১৫ সালে বিশ্বের ছয় শক্তিধর দেশ ইরানের সঙ্গে একটি পরমাণু চুক্তিতে উপনীত হয়।
ওই চুক্তিতে বলা হয়েছিল, আগামী ১০ বছর তেহরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণের রাশ টেনে ধরবে। বিনিময়ে দেশটির উপর থেকে ধীরে ধীরে নানা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।
কিন্তু পরের বছরই যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পট পরিবর্তন হয়, প্রেসিডেন্ট হন ডনাল্ড ট্রাম্প। যিনি শুরু থেকেই ইরান পরমাণু চুক্তির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
২০১৮ সালের মে মাসে ট্রাম্প ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন এবং তেহরানের উপর সব নিষেধাজ্ঞা বহালসহ নতুন করে আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরে গেলেও চুক্তির অংশীদার পশ্চিমা অন্যান্য দেশগুলো চুক্তিটি বাঁচাতে চাইছে।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এ ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির আরো অবনতি ঠেকাতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তিনি আলোচনার বেশ কিছু উদ্যোগও নিয়েছেন। তার লক্ষ্য হচ্ছে, সংকট কাটাতে ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কমানো কিংবা অর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মত কিছু প্রস্তাব নিয়ে ইরানের সঙ্গে আলোচনা করা।
জি৭ সম্মেলন শুরু আগে স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলে ম্যাক্রোঁ বলেছিলেন, জি৭ নেতারা তার উপর এ দায়িত্ব দিয়েছেন। যেন তিনি শনিবার সন্ধ্যায় খবারের টেবিলে এ বিষয়গুলো নিয়ে ট্রাম্পসহ অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন।
তখন জি-৭ এর পক্ষ থেকে যৌথভাবে ইরানকে বার্তা দেওয়ার জন্য ট্রাম্পকে রাজি করতে পারা নিয়ে আশাবাদী ছিলেন ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেছিলেন, “সবাই সংঘাত এড়াতে চায়, এ বিষয়ে ডনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানও অত্যন্ত পরিষ্কার।”
কিন্তু ট্রাম্প নিজের অবস্থানেই অনড় আছেন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, “আমরা নিজেদের মত করে কাজ করব। তবে আমি মানুষের কথা বলা বন্ধ করতে পারি না। তারা কথা বলতে চাইলে বলবে।”
শনিবার ডিনার শেষে সাংবাদিকরা ইরানের বিষয়ে ম্যাক্রোঁর উদ্যোগে ট্রাম্প রাজি কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি এটি নিয়ে আলোচনাই করিনি।”