হংকংয়ে ব্রিটিশ কনসুলেটের কর্মকর্তা ‘চীন সীমান্তে আটক’

হংকংয়ে অবস্থিত ব্রিটিশ কনসুলেটের এক কর্মকর্তাকে চীন সীমান্তে আটক করা হয়েছে- এমন খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 August 2019, 09:51 AM
Updated : 20 August 2019, 09:51 AM

বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে গত ৮ অগাস্ট থেকে হংকংয়ের বাসিন্দা সিমন চ্যাংয়ের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে চীনের গুয়াংডং প্রদেশ ও হংকংয়ের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ বিষয়ক দপ্তর (এফসিও)।

বেইজিংয়ের ব্রিটিশ দূতাবাসও চ্যাংয়ের পরিবারকে সবধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে, জানিয়েছে বিবিসি।

এফসিওর এক মুখপাত্র বলেছেন, “শেনজেন থেকে হংকংয়ে ফেরার পথে আমাদের দলের এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে এমন খবরে আমরা উদ্বিগ্ন।”

চ্যাং ব্রিটিশ কনসুলেটের স্কটিশ উন্নয়ন আন্তর্জাতিক বিভাগের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক কর্মকর্তা বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম এইচকেএফপি।

৮ অগাস্ট ব্যবসা সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তিনি লো উ বহির্গমন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র দিয়ে শেনঝেন যান। ট্রেনে চেপে সেদিনই চলে আসার কথা থাকলেও তিনি হংকং ফেরেননি বলে তার বান্ধবী সংবাদমাধ্যম এইচকে০১-কে জানিয়েছেন।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হংকংয়ে তুমুল সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে চীনের মূল ভূখণ্ডে যাওয়া-আসার সময় সীমান্তে আগের তুলনায় বেশি কড়াকড়ির মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে ভ্রমণকারীরা অভিযোগ করেছেন।

বিচারের জন্য বাসিন্দাদের চীনের মূল ভূখণ্ডে পাঠাতে আইনের সংশোধনী নিয়ে হংকংয়ের সরকারবিরোধী বিক্ষোভের লাগাম টেনে ধরতে বেইজিং চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা তৃতীয় মাসে পড়া এ বিক্ষোভকে ‘সন্ত্রাসবাদের কাছাকাছি’ বলেও অ্যাখ্যা দিয়েছে।

ভ্রমণকারীরা জানিয়েছেন, হংকং থেকে চীনের মূল ভূখণ্ডগামী সবাইকেই এখন চীনা অংশের পুলিশের কঠোর চেকিংয়ে পড়তে হচ্ছে। কর্মকর্তারা যাত্রীদের মোবাইল ফোনের ছবি ও ভিডিওগুলোও খতিয়ে দেখছেন।

বিতর্কিত বহিঃসমর্পণ বিল নিয়ে শুরু হওয়া হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থিদের আন্দোলন এখন শহরটিতে রাজনৈতিক সংস্কার ও বিরোধীদের ওপর পুলিশের বর্বর নির্যাতনের বিচারের দাবিতে দানা বাধছে।

রোববার গণতন্ত্রপন্থিদের এক বিক্ষোভে ১৭ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছে বলেও এর আয়োজকরা জানিয়েছেন।

পুলিশ অবশ্য সেদিনের বিক্ষোভে মাত্র এক লাখ ২৮ হাজার প্রতিবাদকারী অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে। শহরের ভিক্টোরিয়া পার্কে অনুমোদিত প্রতিবাদে এ সংখ্যক বিক্ষোভকারী অংশ নিয়েছিল; পুলিশ কেবল তাদের সংখ্যাই জানিয়েছে বলে ধারণা বিবিসির।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বেইজিংয়ের বেশকিছু কঠোর পদক্ষেপে তারা যে বিক্ষোভ নিয়ে ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেছে, তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চীন হংকংয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেও আশঙ্কা অনেকের।

তবে বিশ্লেষকদের মতে, শেনঝেন সীমান্তে কয়েক হাজার সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন থাকলেও বেইজিং সহসাই হংকংয়ে অভিযান চালাবে বলে তারা মনে করেন না।

সোমবার ফেইসবুক ও টুইটার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা তাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চীন সমর্থিত ভুয়া তথ্য প্রচার করছে এমন অ্যাকাউন্ট ও পেইজ বন্ধ করে দিয়েছে।

টুইটার জানিয়েছে তারা ‘হংকংয়ে রাজনৈতিক বিভেদ সৃষ্টিতে’ ব্যবহৃত হচ্ছিল এমন ৯৩৬টি অ্যাকাউন্ট সরিয়ে নিয়েছে।

সাতটি পেইজ, তিনটি গ্রুপ ও পাঁচটি অ্যাকাউন্ট প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে ফেইসবুক।