কাবুলে বিয়ের আসরে হামলা: দুঃসহ স্মৃতি তাড়া করে ফিরছে বর-কনেকে

আফগানিস্তানের কাবুলে দুইদিন আগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অর্ধশত মানুষ নিহত হলেও বেঁচে গেছেন বর-কনে। কিন্তু ভয়ঙ্কর ওই রাতের দুঃসহ স্মৃতি তাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2019, 01:12 PM
Updated : 19 August 2019, 01:12 PM

টোলো নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বর মিরওয়াইস এলমি বলেন, তার সব আশা শেষ হয়ে গেছে।

“আমার পুরো পরিবার, আমার কনে এখনো ঘোরের মধ্যে আছে। তারা এমনকি কথা পর্যন্ত বলতে পারছে না। আমার কনে বার বার মূর্ছা যাচ্ছে।

“আমার সব আশা শেষ। আমি আমার ভাই হারিয়েছি, বন্ধুদের হারিয়েছি, স্বজনদের হারিয়েছি। আমার জীবনে আর কখনো খুশি আসবে না।”

কনের বাবা স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে জানান, হামলায় তার পরিবারের ১৪ জন নিহত হয়েছে। বরের আপন ভাইসহ তার পরিবারের বেশ কয়েকজনও হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।

গত শনিবার রাতে কাবুলের শিয়া মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় একটি কমিউনিটি হলে বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালে আত্মঘাতী ওই হামলায় ৬৩ জন নিহত এবং ১৮০ জন আহত হয়।

মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক জঙ্গিদল ইসলামিক স্টেট (আইএস) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে।

প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি একে ‘বর্বরোচিত’ হামলার বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি এ জন্য তালেবানকে দায়ী করে বলেন, ‘তারাই আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদকে ঘাঁটি গাড়ার সুযোগ করে দিয়েছে’।

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানে তালেবান সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই আফগানিস্তানে যুদ্ধ চলছে। দীর্ঘ ১৮ বছরের এই লড়াই-সংঘাতের সবচেয়ে বড় শিকার হয়েছে সাধারণ মানুষ।

তালেবানও হয়ত এখন এ অবস্থার অবসান চাইছে। যে কারণে তারা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনার পথরেখা তৈরির আলোচনায় অংশ নিচ্ছে।

কিন্তু শান্তি ফেরানো যে কতটা কঠিন তা দিন দিন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। কারণ, আলোচনা চলার মধ্যেই দেশটিতে একের পর এক হামলা হচ্ছে। যেগুলোর বেশির ভাগের দায় স্বীকার করেছে আইএস।

সাঁড়াশি আক্রমণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে পালিয়ে যাওয়া আইএস যোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয় হয়ে উঠেছে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান।

আইএস জঙ্গিরা দেশটির পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলে ঘাঁটি গেড়েছে এবং আফগান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনী উভয়ের বিরুদ্ধেই লড়াই করছে।

তারা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে শুরু হওয়া শান্তি আলোচনার অংশও নয়।