ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী সরানোর প্রস্তাব প্রেসিডেন্টের

জাকার্তা থেকে রাজধানী সরিয়ে বোর্নিও দ্বীপে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2019, 10:00 AM
Updated : 16 August 2019, 10:00 AM

স্বাধীনতা দিবসের একদিন আগে শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট জোকো উয়িদোদো এ প্রস্তাব দেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

মালয়েশিয়া ও ব্রুনেইয়ের সঙ্গে শেয়ার করা দ্বীপ বোর্নিওর ইন্দোনেশিয়া অংশ কালিমানতানে নতুন রাজধানী করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তবে নতুন রাজধানীর জন্য নির্দিষ্ট স্থানটির নাম প্রকাশ করেননি তিনি। 

পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে উয়িদোদো বলেন, “আমাদের জাতীয় রাজধানী কালিমানতানে সরিয়ে নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি আমি। রাজধানী শহর শুধু জাতীয় পরিচয়ের প্রতীকই নয়, এটি জাতীয় উন্নয়নের প্রতিনিধিত্বও করে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক সাম্য ও ন্যায়বিচার উপলব্ধির জন্যও এটি করা দরকার।”

এপ্রিলে অনুষ্ঠিত ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন উয়িদোদো, অক্টোবরে শপথ নেওয়ার মাধ্যমে দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করবেন তিনি।

জনাকীর্ণ, দুষিত শহর জাকার্তা থেকে কয়লা খনি সমৃদ্ধ, বনাচ্ছাদিত, ওয়াংওটাং ও এক কোটি ৬০ লাখ লোক অধ্যুষিত বিশাল ভূখণ্ড কালিমানতানে রাজধানী সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তিনি।

সম্ভাব্য রাজধানীর স্থান জরিপের জন্য মে মাসে কালিমানতান ভ্রমণ করেছেন উয়িদোদো। গত মাসে টুইটারে দেওয়া এক সংক্ষিপ্ত তালিকায় কেন্দ্রীয়, পূর্ব ও দক্ষিণ কালিমানতান প্রদেশের নাম প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

নতুন রাজধানীর বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

এগুলোর মধ্যে নতুন রাজধানীকে অবশ্যই ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রস্থলে থাকতে হবে। পশ্চিম থেকে পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত পাঁচ হাজার কিলোমিটার বিস্তৃত দ্বীপপুঞ্জ ইন্দোনেশিয়ায় ১৭ হাজারেরও বেশি দ্বীপ আছে।

ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই ভূমিকম্প, বন্যা ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। দেশের অন্যান্য অংশের তুলনায় নতুন রাজধানীতে এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি কম থাকতে হবে

জাকার্তা বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে ঘন বসতিপূর্ণ শহর। শহরটিতে এক কোটিরও বেশি লোক বাস করে, তবে এর আশেপাশের শহরগুলোর বাসিন্দাদের ধরলে লোকসংখ্যা এর তিনগুণ হবে।

শহরটি বন্যাপ্রবণ এবং এর লাখ লাখ বাসিন্দা ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করায় ভূমি অবনমনের কারণে দিন দিন শহরটি দেবে যাচ্ছে।

রাজধানীকে একটি নিরাপদ ও কম বসতিপূর্ণ এলাকায় সরিয়ে নিতে তিন হাজার ৩০০ কোটি ডলারের মতো ব্যায় হতে পারে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী বামবাং ব্রোজেনেগোরো।

এই ব্যায়ের মধ্যে নতুন সরকারি দপ্তর ও প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারীর আবাসস্থল তৈরির খরচও ধরা হয়েছে। এসব দপ্তর ও কর্মচারীরা ২০২৪ সালে জাকার্তার পাট চুকিয়ে নতুন রাজধানীতে যাওয়া শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইন্দোনেশিয়ার আগে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমার ও মালয়েশিয়া তাদের রাজধানী শহর পরিবর্তন করেছিল।