ইয়েমেনের এডেনে সৌদি জোটের দুই বাহিনীর সংঘর্ষে নিহত ৩

ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের অস্থায়ী ঠিকানা এডেনে দক্ষিণাঞ্চলীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের রক্ষী দলের সংঘর্ষে তিন জন নিহত হয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 August 2019, 06:41 AM
Updated : 8 August 2019, 06:41 AM

বুধবারের এ সংঘর্ষে আরও নয় জন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় কর্মকর্তা ও বাসিন্দারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

এ সংঘর্ষ ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইরত সৌদি সমর্থিত জোট বাহিনীর মধ্যে থাকা ফাটল প্রকট করলো বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

হুতিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দক্ষিণাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রেসিডেন্ট আব্দ-রাব্বু মনসুর হাদির সরকার একজোট হলেও ইয়েমেনের ভবিষ্যৎ প্রশ্নে তাদের মধ্যে বিরোধ আছে।

গত সপ্তাহে এডেনে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক ডজন সেনা নিহত হওয়ার পর দুপক্ষের বিরোধ প্রকাশ্য রূপ নেয়। নিহতদের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের একজন প্রভাবশালী কমান্ডারও আছেন।

বুধবার এডেনের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছে ওই নিহত কমান্ডারের ও সৈন্যদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে জড়ো হওয়া বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কয়েকশত সমর্থক সরকারবিরোধী শ্লোগান তোলার পর প্রেসিডেন্টের রক্ষীদের সঙ্গে তাদের গোলাগুলি হয়।

প্রেসিডেন্টের রক্ষীদলের কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সানাদ আল রাহওয়া ইয়েমেনের অনলাইন সংবাদপত্র মাসদার অনলাইনকে জানিয়েছেন, সশস্ত্র কয়েকটি দল প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে হামলার চেষ্টাকালে তার বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে।

জানাজা শেষ হওয়ার পর সাউদার্ন ট্র্যানজিশনাল কাউন্সিলের (এসটিসি) ভাইস-প্রেসিডেন্ট হানি আলী বারিক সমর্থকদের মিছিল নিয়ে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে গিয়ে সরকারকে উচ্ছেদ করতে বলেন, কিন্তু তার আহ্বান সত্বেও এ ধরনের কোনো মিছিল শুরু হতে দেখা যায়নি।

হাদি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ আল মাইসারি জানিয়েছেন, এডেনের স্থিতিশীলতা বজার রাখার জন্য সরকার সংযম ধরে রেখেছে কিন্তু রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যস্থল করে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলে লড়াই করার জন্য ‘পুরোপুরি প্রস্তুত’ আছে।

“এ ধরনের ডাকে সাড়া না দেওয়ার জন্য ইয়েমেনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আমরা, কারণ তাদের উদ্দেশ্য শুধু লড়াই করা এবং শুধু হুতিদের সেবা করা,” বলেন তিনি। 

এডেনের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় দেশটিতে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত মার্টিন গ্রিফিথস উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সহিংসতার পর সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আনওয়ার গারগাশ। এই পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে অবিহিত করেছেন তিনি।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দক্ষিণ ইয়েমেনে ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল কায়েদার হামলার পর এ দুপক্ষের বিরোধ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

ইউএই হুতি-বিরোধী জোটের সঙ্গে আছে, কিন্তু তারা দক্ষিণ ইয়েমেনের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পৃষ্ঠপোষক।

অপরদিকে এই সহিংসতায় একমাত্র হুতিরাই লাভবান হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইয়েমেনে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত।